আজ: শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ইং, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, বুধবার |

kidarkar

গাজায় সংঘাত প্রস্তাবিত নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সাড়া দিয়েছে হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির নতুন একটি প্রস্তাবিত চুক্তিতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিবিসিকে হামাসের ওই নেতা বলেন, ‘(গাজায়) নতুন একটি যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তুত হয়েছে এবং আমরা তাতে সাড়া দিয়েছে। তবে হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে গাজা পুনর্গঠন সংক্রান্ত কয়েকটা ধারা বা শর্তও যেন সেই চুক্তিতে সংযুক্ত করা হয়।’

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর এবং এই যুদ্ধের অন্যতম পক্ষ ইসরায়েলের তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত হওয়া এই চুক্তি সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত তেমন কিছু জানা যায়নি। সূত্রের বরাতে কেবল এটুকু জানা গেছে যে চুক্তিতে ৬ মাসের যুদ্ধবিরতি এবং আরও বেশি সংখ্যক জিম্মি-বন্দি বিনিময় প্রস্তাব করা হয়েছে।

ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র— উভয়পক্ষই বলেছে যে তারা হামাসের জবাব পর্যালোচনা করছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন। বিবিসিকে তিনি জানিয়েছেন, হামাসের প্রতিক্রিয়ার প্রসঙ্গে ইসরায়েলের অবস্থান জানতে বুধবার রাষ্ট্রটির সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

হামাসের শীর্ষ নেতা ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়াসহ গোষ্ঠীটির বেশ কয়েক জন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কাতারে বসবাস করেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি এক বার্তায় বলেছেন, ‘এক সপ্তাহ আগে হামাসের কাছে চুক্তির খসড়া পাঠানো হয়েছিল। হামাস নেতারা আমাদের জানিয়েছেন যে চুক্তির ব্যাপারে তারা ইতিবাচক। আমরা আশা করছি শিগগিরই একটি সফল যুদ্ধবিরতি চুক্তি আমরা উপহার দিতে পারব।’

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরেও নিয়ে যায়। অভূতপূর্ব সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

চার মাস ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬৮ হাজার। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় বাড়িঘর হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, ও মিসরের নিরলস চেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ দিনের অস্থায়ী বিরতি চুক্তি হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে। সেই ৭ দিনে নিজেদের কব্জায় থাকায় জিম্মিদের মধ্যে ১০৮ জনকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। পাল্টায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দেড়শ’রও বেশি মানুষকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েলও।

হিসেব অনুযায়ী, হামাসের কব্জায় এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছে। তাদের ফিরে পেতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছেন জিম্মিদের স্বজনরা। ইসরায়েলের সাধারণ জনগণের একাংশও যোগ দিয়েছেন এসব কর্মসূচীতে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতা এতদিন প্রকাশ্যে নিয়মিত বলে আসছিলেন যে তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধী। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে তিনিও তেমন উচ্চ-বাচ্য করছে না। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে সাধারণ জনগণের বিক্ষোভ-কর্মসূচির কারণে, ব্যাপক চাপে আছেন তিনি এবং দিন দিন সেই চাপ বাড়ছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.