আজ: রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ইং, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, বুধবার |

kidarkar

মিথুন নিটিংয়ের বিরুদ্ধে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেডের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে চার বছরের বেশি সময় ধরে। কোম্পানিটি ৭ বছরেও বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তবে লোকসানি এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েই চলেছে। জেড ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর উল্লম্ফনের পেছনে কারসাজি চক্রের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা। ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, গত ১৪ দিনে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯৯ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত মাসের ২৮ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিলো ১২ টাকা ৮০ পয়সা। আর আজ মঙ্গলবার কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ ২৫ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ মাত্র ১৪ দিনের ব্যবধানে শেয়ারটির দর বেড়েছে ১২ টাকা ৭০ পয়সা বা ৯৯ দশমিক ২১ শতাংশ।

গত ৮ বছর বছর ধরেই ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা মিথুন নিটিংয়ের লোকসান অব্যাহত রয়েছে। কারখানা বন্ধ ও লোকসানে থাকায় গত ৩০ জুন,২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এভাবেই গত সাত বছরের কোনো বছরেই লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি কোম্পানিটি। সর্বশেষ গত ৩০ জুন,২০১৬ সমাপ্ত হিসাববছরে ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিলো। তবে ২০ শতাংশের পুরোটাই স্টক ডিভিডেন্ড (বোনাস লভ্যাংশ)। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর এ যাবতকাল ক্যাশ ডিভিডেন্ড (নগদ লভ্যাংশ) দেওয়ার রেকর্ড নেই। তবুও কোম্পানিটির শেয়ারদর কেন এত লাফিয়ে বাড়ছে তা নিয়ে দ্বিধায় আছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসই সূত্র মতে, গত ১৪ দিনে ‘জেড’ ক্যাটাগরির মিথুন নিটিংয়ের শেয়ারদর দ্বিগুণ বেড়েছে। এমন শেয়ারদর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পেছনে কোনো অপ্রকাশিত তথ্য বা কারসাজি আছে কি-না জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠায় ডিএসই। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর পাঠানো চিঠির জবাবে কোম্পানটি জানিয়েছে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ার দর বাড়ছে।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এবিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মিথুন নিটিংয়ের উৎপাদন বন্ধ আছে। কোম্পানিটির বিপরীতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুয়ায়ী কোনো ধরণের কারসাজির প্রমান পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি।

এর আগে, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে। উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা তাদের ধারণকৃত ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ শেয়ার বেসিক ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে ঋণ নেয়। পরবর্তীতে তা পরিশোধ করতে না পারায় খেলাপি হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কাছে বন্ধক রাখা শেয়ার অধিগ্রহণের অনুমতি চেয়ে আবেদন জানায় ব্যাংকটি। এমন কার্যক্রম সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন হতে পারে বলে মনে করছে বিএসইসি। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানিয়েছিলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িংকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রাসঙ্গিক নথির সঙ্গে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কোম্পানিটিকে একটি প্রস্থান পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছিলো বিএসইসি।

উল্লেখ্য, কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৮০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৩২ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার ৩ কোটি ২৪ লাখ ৯১ হাজার ১৬২টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬৭ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

১ টি মতামত “মিথুন নিটিংয়ের বিরুদ্ধে বিএসইসির তদন্ত কমিটি”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.