আজ: বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ইং, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

প্রধানমন্ত্রী: ১৯৪৮ সালে দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাকিস্তানিরা বাঙালির মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণের পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে স্বাধীন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দেশের স্বাধীনতার কথা আপনি কখন থেকে চিন্তা করেন। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পাকিস্তানিরা কেড়ে নিয়েছিল, সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওদের সঙ্গে আর থাকবো না’।”

“ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই কিন্তু স্বাধীনতা। একজন নেতা নিজের জীবনের সব বিসর্জন দিয়ে একটি জাতির জন্য দিনের পর দিন কারাবরণ করেছেন। জেল-জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। যে লক্ষ্য তিনি স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি চুয়ান্ন সালে নির্বাচনও করেছেন, ছাপ্পান্ন সালে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। নিয়ম মেনেই কিন্তু এগিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য স্থির রেখে। যেটা কখনো তিনি মুখে উচ্চারণ করেননি। কিন্তু একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা বা তাদের সংগঠিত করা, ঐক্যবদ্ধ করা এটা একটা কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজ তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যান।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাকে করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

“যারা জয়বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না, তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। দেশের মানুষের অর্থসামাজিক উন্নতি চায় না। তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে। সেজন্যই তারা বারবার ইলেকশন বানচাল করে, বারবার অগ্নি সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করবার জন্য, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই ভাষণই মানুষকে প্রেরণা দিয়েছে। এই ভাষণের প্রতিটি কথা, প্রতিটি লাইনই হচ্ছে একটা কোটেশন। সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি একটা যুদ্ধের রূপরেখা দিয়ে যান। বাঙালিরা স্লোগান দিতে দিতে হাতে লাঠি, কেউ বৈইঠা নিয়ে এসেছিল। সবাই প্রেরণা নিয়ে চলে যায় যার যার এলাকায়। ঠিকই যার যা কিছু আছে, অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। ৭ মার্চের ভাষণ এখন ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক প্রামাণিক দলিল স্বীকৃতি পেয়েছে।’

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এ ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের বহু লোক জীবন দিয়েছে। পৃথিবীতে কোনো ভাষণ এতদিন পর্যন্ত মানুষকে প্রেরণা জোগায়নি। পৃথিবীতে যত ভাষণ আছে হয় লিখিত, না হয় একবারই ভাষণ দেওয়া হয়েছে। জাতির পিতা হত্যা করার পর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা ৭ মার্চে এই ভাষণটা বাজিয়েছে, ২৬ মার্চ বাজিয়েছে, ১৫ আগস্ট বাজিয়েছে। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে নিজে জেল খেটেছে, এমনকি অনেকে জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। কিন্তু থেমে যায়নি। যতই তারা নিষিদ্ধ করুক, সেটা কিন্তু তারা নিষিদ্ধ করতে পারেনি। মানুষের হৃদয়ে গেতে গিয়েছিল।

৭ মার্চের দিবসটি আমরা পালন করছি, পালন করছে এই কারণে, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এ কাজটি তিনি করতে গিয়েও তাকে করতে দেওয়া হয়নি, ১৫ আগস্টে তাকে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এদেশে মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.