আজ: মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার |

kidarkar

উপজেলা ভোটেও অংশ নেবে না বিএনপি

শেয়ারবাজার ডেস্ক : আসন্ন উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

রিজভী বলেন, সোমবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভাচুর্য়াল সভা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৮ মে থেকে শুরু হওয়া আসন্ন চার ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগণের কাছে জবাবদিহি করে সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত। এই শর্তের অনুপস্থিতিতে স্বৈরতন্ত্র আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বৈরাচারের অভ্যুদয় হয়েছে।

আওয়ামী দখলদার শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হয়ে দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করেছে। তাদের আমলে কখনোই জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। জনগণের ভোটের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদেরই আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন বিজয়ী ঘোষণা করে। দখলদার শাসকগোষ্ঠী প্রতিটি নির্বাচনের আগে জনগণকে প্রতারিত করার জন্য নতুন নতুন রণকৌশল গ্রহণ করে।

এতে আরও বলা হয়, প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি। তাদের অধীনে সব জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের প্রার্থীদের নানাভাবে হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া এবং নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা ও শারীরিক আক্রমণসহ পথে পথে বাধা দেওয়া হয়। অনেককেই মনোনয়নপত্র জমা দিতেও দেওয়া হয়নি।

বিএনপির ভাষ্য, অগণতান্ত্রিক শক্তি কখনো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মিত্র হতে পারে না। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ভোটারবিহীন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সব আয়োজন সম্পন্ন করার পরও তারা আশঙ্কামুক্ত হতে পারেনি। তাই নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদেরও নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ না দেওয়া, ইন্টারনেটের গতি শ্লথ করা, নাগরিকদের নজরদারি নস্যাৎ ইত্যাদি নজিরবিহীন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বিনাশী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর আগেও জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টদের নানাভাবে বাধা প্রদান করা হয়। কিছু এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হলেও পরক্ষণেই তাদের বের করে দেওয়া হয়। একতরফা নির্বাচন করতে গিয়ে বিএনপিসহ গণতন্ত্রমনা দলগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে ভরে রাখে। ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কারান্তরীণ করা হয়, অনেকেই এখনো কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গুম, খুন অব্যাহত আছে।

বিএনপির বক্তব্য, এমতাবস্থায় বিএনপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের প্রকাশ্য একপেশে ভূমিকার জন্য আগে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। এখনো সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি এবং বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতি আরও অবনতিশীল হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। এই সরকার ভোট, সংবিধান, ভিন্নমত প্রকাশ, বহুদলের অংশগ্রহণে নির্বাচনসহ মানুষের সহজাত অধিকারগুলোকে বিপর্যস্ত করেছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখা। সহিংস সন্ত্রাসের ব্যাপক বিস্তারের ফলশ্রুতিতে এই অবৈধ সরকারের অপরাজনীতি ও নির্বাচনী প্রহসনের অংশীদার না হওয়ার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বিএনপি। আগামী ৮ মে থেকে শুরু হওয়া সবকটি ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে দলটি।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.