কিউআইও আবেদন শুরু ২১ এপ্রিল
রফতানিতে ভূমিকা রাখবে ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যার

নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যার অ্যান্ড এক্সেসরিজ লিমিটেড রফতানিমুখী জুতা তৈরির কোম্পানি। ২০১৭ সালে একটি রপ্তানিমুখী কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যার।
পুঁজিবাজারের এসএমই খাতে তালিকাভুক্তির হতে পাঁচ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন পেয়েছে রপ্তানিমুখী চামড়াশিল্প প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানিটির কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর অফারের (কিউআইও) আবেদন গ্রহণ শুরু হচ্ছে আগামী রোববার (২১ এপ্রিল)।
এক্সচেঞ্জের ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ার সাবস্ক্রিপশন আবেদন ওই দিন শুরু হয়ে চলবে ২৫ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। বুধবার (১৭ এপ্রিল) কোম্পানির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যারের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাদাত হোসেন সেলিম বলেন, কিউআইওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ আমরা আধুনিকীকরণ, পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ এবং প্রতিস্থাপনের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ও কার্যকর মূলধন ব্যবস্থাপনায় ব্যাবহার করব। এই কৌশলগত বিনিয়োগ আমাদের উন্নত মানের পণ্য তৈরিতে সাহায্য করবে, যার মাধ্যমে আরও বিদেশি ক্রেতা আমাদের পণ্য কিনতে আগ্রহী হবেন। একই সঙ্গে এই উদ্যোগ কেবল রেমিট্যান্স প্রবাহকে শক্তিশালী করবে না, আমাদের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাও বাড়িয়ে তুলবে।
আমরা এরইমধ্যে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সক্ষমতা আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে প্রতি ঘণ্টায় ৭৫-৮০ জোড়া জুতা উৎপাদন হচ্ছে, যা শিগগিরই বাড়িয়ে ৯০ জোড়ায় উন্নীত করা হবে।
উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে আনতে প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধেই পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়া এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) সফটওয়্যারের সঙ্গে যুক্ত হবে। ফলে উৎপাদন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। একইসঙ্গে কাঁচামাল সংগ্রহে অভ্যন্তরীণ উৎস বাড়ানো হচ্ছে। এতে আমদানি ব্যয় কমবে। নতুন বাজার খোঁজার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। বিদ্যমান বাজারের পাশাপাশি নতুন কয়েকটি দেশেও উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে ক্রাফটসম্যান। গুণগতমানের কারণেই ক্রাফটসম্যানের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাত হোসেন সেলিম আরো বলেন, পুঁজিবাজারে প্রতিষ্ঠানটি তালিকাভুক্ত হলে দেশ এবং দেশের বাইরে ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যারের গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে। যেহেতু আমাদের মূলধন ছোট, এ কারণে আমরা প্রথমে এসএমই প্লাটফর্মে আসতে চাইছি। কয়েক বছর সেখানে থাকার পর আমরা পুঁজিবাজারের মূল প্লাটফর্মে যাবো।
তাছাড়া দেশের বাইরে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্রহণযোগ্যতা বেশি এবং একটি ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করে। মূলত এ দুই কারণেই আমরা পুঁজিবাজারে আসতে চাইছি। আমাদের উপর আস্থা রাখুন, আমরা আপনাদের আস্থার মর্যাদা রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দেশের পুঁজিবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহের (আইপিওর) অনুমোদন পেয়েছিল জুতা এবং চামড়াজাত পণ্য উৎপাদক ও রফতানিকারক কোম্পানি ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড। ১০ টাকা মূল্যমানের ৫০ লাখ শেয়ার ছেড়ে প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজার থেকে পাঁচ কোটি টাকা সংগ্রহে করবে।
পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা, আধুনিকীকরণ, পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণে (বিএমআরই) দুই কোটি টাকা, ব্যাংক ঋণ পরিশোধে এক কোটি টাকা, কার্যকর মূলধন ব্যবস্থাপনায় এক কোটি ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ২০৭ টাকা এবং আইকিউআইও (ইনিশিয়াল কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার) সম্পর্কিত খাতে ৪৫ লাখ ১৯ হাজার ৭৯৩ টাকা ব্যয় করবে কোম্পানিটি।
কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২-২৩ হিসাববছরে পণ্য বিক্রি থেকে ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যারের আয় হয়েছে ৭৩ কোটি টাকা। পণ্য উৎপাদন ব্যয় সমন্বয়ের পর মোট আয় হয় ১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে এই হিসাববছরে ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা নগদ সহায়তা পেয়েছে কোম্পানিটি। ব্যাংকঋণ ও কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এ হিসেবে ২০২২-২৩ হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৩৫ পয়সা, যা আগের হিসাববছরে ছিল ১ টাকা ৯১ পয়সা। সর্বশেষ হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হচ্ছে ১৬ টাকা ৭২ পয়সা