আজ: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ইং, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

ফুলের মালা পরানোর পরে কেন রিট, জানালেন নিপুণ

বিনোদন ডেস্ক : দুই বছর আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফল নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে গিয়েছিলেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। ঠিকই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করলেন দুই বছর পর।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে নতুন নির্বাচন দাবি করেছেন নিপুণ। এ বিষয়ে বুধবার (১৫ মে) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে আইনজীবীর মাধ্যমে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন তিনি।

নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।

সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন এই নায়িকা। যেখানে তার বিপরীতে লড়াই করেছেন অভিনেতা ডিপজল। নির্বাচনের পরদিন ফলাফল ঘোষণার সময় তাদের সঙ্গেই হাস্যজ্জল অবস্থায় দেখে মেলে নিপুণের। এমনকি ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিতেও দেখা যায় জয়ী প্রার্থীদের।

তবুও মাসখানেক পর নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে কেন রিট করলেন নিপুণ সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন নিপুণ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তিনি। তবে দেশ ছাড়ার আগেই রিট করার সমস্ত বিষয় ঠিক করে গিয়েছিলেন।

সেখান থেকেই এই নায়িকা বললেন, ‘রিট আরও আগেই করা উচিত ছিল। ভোট হয়েছে শুক্রবার। ভোটের ফলাফল এসেছে শনিবার সকালে। রোববারই রিটটি করা দরকার ছিল। কিন্তু আমি অসুস্থ হয়ে পড়া এবং জরুরি কাজে যুক্তরাজ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। আমি আসার সময় সবকিছু প্রসেস করে রেখে এসেছিলাম। গত মঙ্গলবার আমার আইনজীবীর মাধ্যমে রিটটি করেছি।’

শুধু ভোটের দিনই নয়, ভোটের আগের দিন থেকেই মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন আপিল বোর্ডের যোগসূত্রে এই অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন নিপুণ।

তিনি বলেন, ‘‘ভোট শেষ হওয়ার পর তখন সন্ধ্যা সাতটা। তখন থেকেই নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কথাবার্তা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান খসরু ভাই বারবার আমাকে বলছিলেন, ‘এখানে বসে থেকে আর লাভ নাই। বাসায় চলে যান। মিশা-ডিপজল পুরো প্যানেল জয়লাভ করবে।’ আমি বারবার বলেছি, ‘হারজিত যা হোক, ফলাফল না নিয়ে এখান থেকে যাব না।’ তখনও পোর্টফোলিও ভোটের বাক্সই খোলেনি, কীভাবে চেয়ারম্যান এসব বলতে পারেন?’’

ভোট শেষে যখন ফলাফলের অপেক্ষায় সেসময়ের কথা উল্লেখ করে নিপুণ বলেন, ‘যতই রাত বাড়ছিল, ততই ভোটকেন্দ্র ও বাইরের পরিবেশ আমার কাছে হুমকিস্বরূপ মনে হচ্ছিল। সেদিনের এমন পরিবেশ আমি আগে কখনও দেখিনি এফডিসিতে। পুরো আঙিনা তারা দখলে নিয়েছিল। ভোটের গণনা শেষ হতে তখনও অনেক সময় বাকি ছিল, কিন্তু তাদের হাবভাবে মনে হচ্ছিল, তখনই তারা পুরো প্যানেল জিতে গেছে। আমি নিজেও নিরাপদ মনে করিনি ভোট গণনার পুরো রাত। তাই আমিসহ আমার প্যানেলের কয়েকজন এক নম্বর স্টুডিওর মেকাআপ রুমে তালা মেরে ভেতরে বসে ছিলাম ভোটের ফলাফল পর্যন্ত।’

ভোটে বিজয়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেন তেমনটা করেছিলেন, জানতে চাইলে নিপুণ বলেন— ‘যেহেতু আমি ভোটের ফলাফল পর্যন্ত ছিলাম। তা ছাড়া ওই সময় সেটি করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তা ছাড়া মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, আপিল বোর্ডের যোগসাজশে ভেতরে-ভেতরে এত বড় অনিয়ম চলে আসছিল, সেটি ফলাফল প্রকাশের অনেক সময় পর স্পষ্ট হয়েছে।’

নিপুণ আরও বলেন, ‘আদালত তো আমাদের আস্থার জায়গা। যেসব ডকুমেন্টের ভিত্তিতে রিট করা হয়েছে, আমি বিশ্বাস করি, নবনির্বাচিত কমিটি স্থগিত হবে। আমাদের পক্ষে রায় আসবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচন। এতে সভাপতি পদে মিশা ২৬৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট। ১৬ ভোট কম পেয়ে হেরে যান তার প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুণ। তিনি পেয়েছেন ২০৯ ভোট।

১ টি মতামত “ফুলের মালা পরানোর পরে কেন রিট, জানালেন নিপুণ”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.