আজ: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ইং, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৬, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

এনার্জিপ্যাকের আইপিও ইস্যুতে প্রশ্নবিদ্ধ বিএসইসি

energyশেয়ারবাজার রিপোর্ট: অভিহিত মূল্যের চেয়ে বেশি দরে অর্থাৎ প্রিমিয়াম মূল্যে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে হলে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি আবেদন করতে হবে— এমন বিধান রেখে গত ৩১ ডিসেম্বর গেজেট আকারে পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫ জারি করা হয়েছে। কিন্তু প্রজ্ঞাপন জারির ৫ দিনের মাথায় রহস্যজনকভাবে তড়িঘড়ি করে বিএসইসির ৫৬৩তম কমিশন সভায় পুরনো আইনে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডকে  পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিএসইসির এই প্রশ্নবিদ্ধ আচরণে বাজার সংশ্লিষ্টদের মনে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, এনার্জিপ্যাক পাওয়ারকে ১৫ টাকা প্রিমিয়ামে অর্থাৎ ২৫ টাকা বরাদ্দমূল্যে আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। আইপিওর মাধ্যমে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার ২০০টি শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ৪১ কোটি ৮২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করবে। উত্তোলিত টাকা দিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, চলতি মূলধন ও আইপিও খাতে ব্যয় করা হবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

অথচ পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫ এর গেজেটেই পুরানো আইনকে বাতিল করা হয়েছে। তাছাড়া কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্তির আবেদন করেছিল।

প্রজ্ঞাপন জারির পরও ফিক্সড প্রাইসে প্রিমিয়ামে অনুমোদনের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার ‘পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫’ এর প্রজ্ঞাপন জারির আগে অর্থ উত্তোলনের জন্য আবেদন করেছে। যে কারণে প্রিমিয়ামের জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতি এ কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

কোন বিশিষ্ট মহলের প্ররোচনায় কোম্পানিটিকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, কমিশন নিজের গতিতে চলে। অন্যের ইচ্ছা অনিচ্ছায় কমিশন চলে না।

এদিকে বিএসইসি এনার্জিপ্যাককে তড়িঘড়ি করে অনুমোদন দিলেও পাইপ লাইনে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোকে নুতন পাবলিক ইস্যু আইনে পুনরায় আবেদন করার নির্দেশ দেয়। এ কোম্পানিগুলো হলো: সামিট উত্তরাঞ্চল পাওয়ার লি:, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, এসটিএস হোল্ডিং, শামসুল আলামিন রিয়েল অ্যাস্টেট, এনডিএ টেলিকম, মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা রিজেন্সি হোটেল এন্ড রিসোর্ট, ডেল্টা হসপিটাল, আফতাব হেচারি এবং করিম স্পিনিং মিলস লি:।

পূর্বে আবেদন করা কিছু কোম্পানিকে পুনরায় আইপিও আবেদন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে কেন জানতে চাইলে বিএসইসি’র এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন আইনে প্রিমিয়াম নিয়ে ফিক্সড প্রাইসে আসার সুযোগ নেই। তাই যারা প্রিমিয়াম চেয়েছে তাদেরকে পুনরায় আবেদন করতে হবে। তবে যেসব কোম্পানি প্রিমিয়াম ছাড়া আইপিও আবেদন করেছে তাদেরকে নতুন নিয়মে শুধু ডিসক্লোজার জমা দিলেই চলবে। কারণ যেহেতু ২০০৬ সালের আইন বাতিল হয়ে গেছে। তাই পুরানো আইনে আমরা বর্তমানে কাউকেই সম্মতি পত্র (কনসেন্ট লেটার) দিতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, এনার্জিপ্যাকের আইপিও অনুমোদন কমিশন সভার কার্যসূচীতে অনেকদিন থেকেই ছিল। তাই তাকে পুরানো আইনে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু কোম্পানি কমিশন সভার কার্যসূচীতে থাকায় তাদেরও পুরানো আইনেই অনুমোদন দেয়া হবে।

এনার্জিপ্যাককে কোন আইনে কনসেন্ট লেটার দেয়া হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা আমাদের কমিশন সভা নির্ধারণ করবে।

এ প্রসঙ্গে একাধিক ইস্যু ম্যানেজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, বিএসইসি কিছু কোম্পানিকে পুরানো পাবলিক ইস্যু আইনে আইপিও অনুমোদন দিচ্ছে আবার কিছু কোম্পানিকে পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫ আইনে পুনরায় আবেদনের নির্দেশ দেয়ার মতো পরস্পর বিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতে কোম্পানির পাশাপাশি ইস্যু ম্যানজারদের প্রতিও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।

এদিকে নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব অনুযায়ী, এনার্জিপ্যাকের বিগত ৫ বছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২.৯১ (ওয়েটেড এভারেজ) টাকা করে। ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) ছিল ৩১.১৩ টাকা করে।

কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.