‘মালয়েশিয়া জেলে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভাল’
![](https://www.sharebazarnews.com/wp-content/uploads/2016/04/azamot-ali.jpeg)
শেয়ারবাজার ডেস্ক: মালয়েশিয়া জেলে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভাল। এমন কথা জানালেন সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত বৈধ শ্রমিক মো. আজমত উল্লাহ হোসেন। তিনি জানান, মালেয়শিয়ার জেলে অবৈধ শ্রমিকের সাথে বহু বৈধ বাংলাদেশী শ্রমিক আটক রয়েছে।
আজমত উল্লাহ হোসেন জানান, জেলে আটক আছে স্টুডেন্ট এবং ট্যুরিষ্ট ভিসায় আসা বহু শ্রমিক। বেশীরভাগই দালালকে টাকা পাসপোর্ট দিয়ে তারা এখন জেলে। একেবারে কাগজপত্রবিহীন শ্রমিকরা দেশটির আইনানুসারে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দুটি করে রতান (বেত্রাঘাত) পাচ্ছে।
কুয়ালালামপুর বুকিত জলিল বন্দী শিবির থেকে মুক্তি পেয়েই আজমত উল্লাহ হোসেন বর্ণনা করেন মালয়েশিয়া জেলের সাজার কথা। মালেয়শিয়ার জেলে এমন অনেক বাংলাদেশী আছেন যারা কয়েক বছর ধরে সেখানে আছেন। কিন্তু এদেশে তাদের কোন লোক না থাকায় দেশে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না।
আজমত জানালেন, দুর্ভাগা সেইসব বন্দীরা জানে তাদের নামে নাকি কেইস আছে। কিন্তু কি কেইস ওরা জানে না। জানতে চাইলে মারধর করা হয়। আজমত বলেন, ‘মালেয়শিয়ায় আটক বিদেশীদের মধ্যে শতকরা ৯৫ জনই বাংলাদেশী। বাকীরা বিভিন্ন দেশের। সেখানে কেউ একটু এদিক সেদিক হলেই রড দিয়ে আঘাত করা হয়।’
খাবার দাবার যা দেয়া হয় তাতে একটা কুকুরের পেটও ভরবে না। সকালে এককাপ লাল চা আর এক টুকরো বনরুটি। দুপুরে একমুঠো ভাত ও একটা শুকনো মাছ। সন্ধ্যায় দুপুরের মতোই খাবার। সারাদিনে শুধু এ খাবার খেয়েই মাসের পর মাস পড়ে আছে অনেকে– এভাবেই জেল জীবনের কষ্টের কথা জানান আজমত।
কিভাবে আটক হলেন জানতে চাইলে আজমত বলেন, দেশে টাকা পাঠাতে গিয়ে গত ২০ মার্চ কোতারায়া এলাকায় ইমিগ্রেশনে আটক হন আজমত। ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় তাঁর মালিক তাঁকে মুক্ত করে আনেন।
আজমত জানান ক্যাম্পের ভেতর থেকে চোরাইভাবে ফোন করার ব্যবস্থা আছে। এজন্য ৫ মিনিট কথা বলতে ৩শ রিঙ্গিত (প্রায় ৬ হাজার টাকা) দিতে হয়। বাইরে থেকে কেউ ব্যাংক একাউন্টে টাকা দিলে দিন সময় মিলিয়ে ঠিক পেলে ফোন করতে পারে বন্দী। তিনি জানান, কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে ট্যুরিষ্ট ভিসায় এসে ১০২ জন বাংলাদেশী ৭ মাস যাবৎ ক্যাম্পে এখনো আটক আছে। আজমত বলেন, ‘আমি হাইকমিশনের কাউকে এ পর্যন্ত ক্যাম্প পরিদর্শনে যেতে দেখিনি।’
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন যাতে হাইকমিশনের মাধ্যমে আটক শ্রমিকদের দ্রুত দেশে পাঠাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু