আজ: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ইং, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ এপ্রিল ২০১৬, সোমবার |

kidarkar

ব্রাফেটের টানা ছক্কায় চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ

westশেয়ারবাজার ডেস্ক: ৬ বলে দরকার ১৯ রান। স্ট্রাইকে অখ্যাত ব্রাফেট। কে জানত এখান থেকে জিতবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটালেন ব্রাফেট। বেন স্টোকসের করা শেষ ওভারে টানা চারটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে পৌছে দিলেন জয়ের বন্দরে। চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সত্যিই অসাধারণ, মনমুগ্ধকর, মিরাকল। এটাই ক্রিকেট, যাকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চিয়তার খেলা।

কলকাতার ইডেন গার্ডেনে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ নিয়ে ইতিহাসের প্রথমবারের মতো কোন দল দ্বিতীয়বারের মতো টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল।

টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। জবাবে ২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌছায় ক্যারিবীয় শিবির। আপাত দৃষ্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের নায়ক মারলন স্যামুয়েলস। ৬৬ বলে ৮৫ রানে অপরাজিত থেকেছেন যিনি। যার মধ্যে ছিল নয়টি চার ও দুটি ছক্কা। কিন্তু আসল জয়ের নায়ক তো কার্লোস ব্রাফেট। ১০ বলে যিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৪ রানে। যার মধ্যে শেষ ওভারেই হাঁকিয়েছেন গগনচুম্বী চারটি ছক্কা। টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি হলো ফাইনালের মতোই।

অথচ ১৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে কাঁপছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিদায় নেন একে একে গেইল, চার্লেস ও সিমন্স। তবে হাল ধরে রেখেছিলেন স্যামুয়েলস। মাঝে ব্রাভোর দায়িত্বশীল ইনিংস। শেষ ওভারে ব্রাফেটের অলৌকিক ব্যাটিং। চার বলে চার ছক্কা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে তখন ইডেন গার্ডেনে ক্যারিবীয়দের  উদ্দাম উল্লাস। ২০১২ সালে প্রথম টি২০ বিশ্বকাপ জেতার পর গেইলরা নেচেছিলেন গ্যাংনাম স্টাইলে। এবার নাচলেন ব্রাভো প্রবর্তিত ‘চ্যাম্পিয়ন ড্যান্সে’। মুষ্টিবদ্ধ হাত একবার সামনে, একবার পিছনে; এমন নাচতো আসলে গেইলদেরই মানায়।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দেখে-শুনে খেলতে থাকেন ক্যারিবীয় ওপেনার জনসন চার্লেস। উইলের করা প্রথম ওভারে মাত্র এক রান নিতে পারে ক্যারিবীয় শিবির। তবে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেটের দেখা পায় ইংল্যান্ড। জো রুটের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই আকাশে বল উঠিয়ে দেন ক্যারিবীয় ওপেনার জনসন চার্লেস। মিডঅনে তা লুফে নেন বেন স্টোকস। সাত বলে এক রান করেন তিনি।

আশা ছিল গেইলের উপর। যিনি সুপার টেন পর্বের প্রথম ম্যাচেই এই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেছিলেন সেঞ্চুরি। সেই গেইল ফাইনালে ফ্লপ। দুই বলে ৪ রান করে তিনিও রুটের শিকার। লং অফে ক্যাচ তুলে দেন স্টোকসের হাতে। ৫ রানে নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।

সেমিফাইনালে গেইল ফ্লপ থাকলেও ভারতের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের নায়ক ছিরেন লেন্ডল সিমন্স। তবে তিনিও আজ গেইলের ধারায় হেঁটেছেন। প্রথম বলেই উইলের এলবিডব্লিউর শিকার তিনি। শূন্য রানে ফেরেন সিমন্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় রান তখন ২.৩ ওভারে মাত্র ১১।

এরপর বলতে গেলে ব্রাভোকে সঙ্গে নিয়ে দলকে চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করেন মারলন স্যামুয়েলস। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তারা সংগ্রহ করে ৭৫ রান। দলীয় ৮৬ রানের মাথায় ব্রাভোকে আউট করে জুটি বিচ্ছিন্ন করেন ইংল্যান্ডের রশীদ। ২৭ বলে ২৫ রান করে ব্রাভো ক্যাচ তুলে দেন রুটের হাতে। ইনিংস মেরামতের তাগিদে ব্রাভো হাঁকিয়েছেন একটি করে ছয় ও চার।

এরপর রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই শুরু হয় মারলন স্যামুয়েলসের। একাই রানের চাকা ঘুরাতে থাকেন স্যামুয়েলস। তবে বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি অপর প্রান্তে থাকা আন্দ্রে রাসেল। ভারতের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠা রাসেল ফাইনালে করতে পেরেছেন মাত্র তিন বলে এক রান। উইলির বলে তিন ক্যাচ দেন স্টোকসের হাতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় রান তখন ৫ উইকেটে ১০৪। ওভার ১৫.১।

স্যামুয়েলসের যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি অধিনায়ক ড্যারেন সামিও । দুই বলে দুই রান করে তিনি উইলির শিকার। ১০৭ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতন ষষ্ঠ উইকেটের।

তবে শেষটা করেছেন স্যামুয়েলস ও ব্রাফেট। একসময় মনে হচ্ছিল হেরেই যাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শেষ ওভারে ১৯ রানের দুরুহ টার্গেট খুব সহজেই পার করেন ব্রাফেট। স্টোকসকে চারবার সীমানা পার করে দলকে শিরোপা উৎসবে মাতান দীর্ঘদেহী ব্রাফেট। ইংল্যান্ডের হয়ে উইলি তিনটি, রুট দুটি ও রশীদ নেন একটি করে উইকেট।

ইংল্যান্ড একাদশ: জ্যাসন রয়, হ্যালেস, জো রুট, ইয়ন মরগ্যান, জস বাটলার, বেন স্টোকস, মঈন আলী, ক্রিস জর্ডান, উইলি, আদিল রশীদ ও প্লাংকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: চার্লেস, গেইল, স্যামুয়েলস, সিমন্স, রাসেল, রামদিন, ব্রাভো, সামি, ব্রাফেট, বদ্রি ও সুলেমান বেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.