মন গললো বিএসইসি’র: ৮০ শতাংশ জরিমানা মওকুফ
![](https://www.sharebazarnews.com/wp-content/uploads/2015/05/BSEC.jpg)
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: অপরাধীর আকুতি মিনতিতে মন গললো শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র। তাতেই দুই প্রতিষ্ঠানের শাস্তি প্রায় ৮০ শতাংশ কমিয়েছে নিয়ন্ত্রণকারী এ সংস্থাটি।
এর আগে অর্থাৎ গতবছরের শেষের দিকে আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে অনিয়মের কারণে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রির আট পরিচালককে ৫ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। পাশাপাশি ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে এনসিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজ এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। অর্থাৎ এ দুই প্রতিষ্ঠানকে মোট ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি।
এরই প্রেক্ষিতে অলটেক্স গত ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখে এবং এনসিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজ গত ৩১ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে শাস্তি থেকে রেহাই পেতে আপিল করে।
আপিল আবেদনের প্রেক্ষিতে শাস্তি থেকে সম্পূর্ণ রেহাই না দিলেও শাস্তি প্রায় ৮০ শতাংশ মওকুফ করেছে বিএসইসি।
বিএসইসি’র এনফোর্সমেন্ট বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রত্যেক পরিচালকের জরিমান ৫ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা কমিয়ে এক লাখ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এনসিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজের জরিমানা ১৫ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা কমিয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এ টাকা ১৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অলটেক্সের অপরাধ: সোনালী ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া প্রায় ১৭৫ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে অর্জিত ১৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার সুদ পরিশোধ করেনি অলটেক্স। এরই মধ্যে রুগ্ণ শিল্প হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় কোম্পানিটি সোনালী ব্যাংকে সুদ মওকুফের আবেদন করেছিল। সোনালী ব্যাংক এ আবেদনের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ফলে গত অর্থবছরের আর্থিক হিসাবে কোম্পানিটির সুদ বকেয়া থেকে যায়। এ অবস্থায় বিদ্যমান আইন ও হিসাবমান অনুযায়ী কোম্পানিটি ব্যাংক সুদের বিপরীতে কোনো মূলধন সংরক্ষণ (প্রভিশনিং) না করে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ১২ কোটি ২৬ লাখ টাকা দেখানো হয়। এ বিষয়ে কোম্পানিটির নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মতামত পাওয়ার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি আর্থিক প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখে। এতে দেখা যায়, আইন অনুযায়ী প্রভিশনিং করা হলে কোম্পানিটির নিট লোকসান দাঁড়াত পাঁচ কোটি ২২ লাখ টাকা। কোম্পানি-সংশ্লিষ্টরা জানান, টানা কয়েক বছর লোকসানে থাকার পর ২০১২ সালে কোম্পানিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয় অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজকে ‘রুগ্ণ শিল্প’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। এর পর সোনালী ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের ওপর অর্জিত সুদ মওকুফের আবেদন করে কোম্পানিটি। কমিশনের মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, গত বছরের আর্থিক বিবরণীতে উলি্লখিত ১১৯ কোটি টাকার স্থায়ী সম্পদের প্রকৃত অবস্থার বিষয়ে কোম্পানিটি কোনো তথ্য দেয়নি। এ ছাড়া কোম্পানির সহযোগী অলটেক্স ফেব্রিক্সে সাত কোটি টাকা বিনিয়োগের ব্যাংক সার্টিফিকেট তলব করলেও কমিশনে তা দাখিল করেনি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
এনসিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজের অপরাধ: সমন্বিত গ্রাহক হিসাব পৃথকভাবে না রাখা, সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের তহবিল ঘাটতি, নন মার্জিনেবল ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন লোন সুবিধা দেয় সিকিউরিটিজ হাউসটি।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ/ম.সা