আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৩ জুলাই ২০১৬, রবিবার |

kidarkar

নিস্ক্রিয় ওটিসির নেপথ্যে ৫ কারণ: অবহেলায় ৬৬ কোম্পানি

OTC_SharebazarNewsশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ইতিমধ্যে ভোগান্তি ও গলার কাঁটা হিসেবে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, যেসকল কোম্পানিকে অনেকটা ধর পাকড়াও করে এ মার্কেটে নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় অধিকাংশেরই পারফরমেন্স মন্দের সিঁড়ি পারি দিচ্ছে। শুধুমাত্র অল্প কিছু কোম্পানি যেগুলো নিয়মিত উৎপাদনের পাশাপাশি লাভে রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এ মার্কেটের কোম্পানিগুলোতে তাদের অনেক টাকা আটকে রয়েছে। যার নেপথ্যে এ মার্কেট প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও পায়নি সক্রিয়তা। এ মার্কেটে অবস্থানরত বর্তমানে ৬৬ কোম্পানি অযন্তে অবহেলায় রয়েছে। এগুলোর নেই কোনো করপোরেট গভর্ন্যান্স। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিপুল পরিমাণ লোকসানে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

জানা যায়, ওটিসি মার্কেটে নিয়মিত লেনদেনের অভাব রযেছে। আর লেনদেন হলেও হাতে গোনা ২/১টি কোম্পানি ছাড়া অন্য কোন কোম্পানিতে ক্রেতাদের কোনো আগ্রহ নেই। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ওটিসিতে ৩ কোটি ৩৪ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়। আলোচিত ঐ বছরে টাকার অঙ্কে লেনদেন দাঁড়ায় ৩৫ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। এদিকে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ওটিসিতে মাত্র ৮৪ লাখ ২০ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৭ কোটি ৮৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। অর্থাৎ লেনদেনে দৈন্যদশা চলছে ওটিসিতে। ফলে নিস্ক্রিয়তার সাইনবোর্ড গলায় ঝুঁলিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৮ তলায় অবস্থান করছে এটি। ওটিসির এই নিস্ক্রিয়তার নেপথ্যে বাজার সংশ্লিষ্টরা কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন।

তারা বলছেন, যেসকল কোম্পানি এ মার্কেটে রয়েছে সবগুলোই দুর্বল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি। জেনেশুনে কেউ আগুনে হাত দিতে চাইবে না। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও একটি কোম্পানি এ মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়নি। নতুন নতুন কোম্পানির লিষ্টিং করতে হলে লিষ্টিং রুলস্ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু এখানে তা নেই। লিষ্টিং রুলস্ না থাকার কারণে কোনো প্রকার লিষ্টিং কমিটিও নেই যারা নতুন কোম্পানিকে এ মার্কেটে তালিকাভুক্ত করতে কাজ করবে। মূল মার্কেটে লেনদেন করতে নতুন নতুন সফটওয়্যার যুক্ত করা হচ্ছে। অথচ ওটিসিতে নতুন সফটওয়্যার যুক্ত করাতো দূরের কথা। অদ্য পর্যন্ত নিজস্ব কোন সফটওয়্যারই নেই। বর্তমানে ডিএসইর ওয়েবসাইট ব্যবহার করে চলছে এর ঢিমেতালে কার্যক্রম। মূল মার্কেটে যেমন টেসা সফটওয়্যার, এমএসএ প্লাস চালু করেছে। কিন্তু এখানে তা নেই। ফলে ওটিসির কার্যক্রম থমকে রয়েছে।

ওটিসির নিস্ক্রিয়তার আরো একটি কারণ হচ্ছে এ মার্কেটে অটোমেটেড ট্রেড সিস্টেম নেই। ফলে লেনদেন করতে হলে নানান জটিলতায় পড়তে হয় বিনিয়োগকারীদের। এরকম ভোগান্তির ভয়ে কেউ এ মার্কেটে লেনদেন করতে ইচ্ছাপোষণ করে না। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওটিসি মার্কেট বর্তমানে স্বল্প পরিসরে আবদ্ধ রয়েছে। এর পরিধি আরো বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এ মার্কেটে কাজ করছে। এদের সাথে আরো দক্ষ লোকবল বাড়ানো উচিত। যাতে ওটিসিকে গতিশীল করতে যাবতীয় কাজকর্ম সম্পাদান করতে পারে।

সবচেয়ে বড় প্রয়োজন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এ মার্কেটের প্রতি সবসময় আন্তরিক থাকা। লিষ্টিং রুলস্, লিষ্টিং কমিটি, নিজস্ব সফটওয়্যার যুক্ত করা, অটোমেটেড ট্রেড সিস্টেম চালু ও এর মার্কেটের পরিসর আরো বাড়ানো হলে নিস্ক্রিয়তার ছাপ মুছে দিয়ে মূল মার্কেটের ন্যায় ওটিসি সক্রিয় অবস্থানে থাকবে বলে মনে করছেন তারা।

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.