পর্তুগাল রেকর্ড গড়লো ইউরো জিতে
শেয়ারবাজার ডেস্ক: দলগত শক্তির বিচারে শিরোপা জেতার লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। স্বাগতিক দেশ হিসেবে দর্শক সমর্থনের দিক থেকে এগিয়ে থাকবে সেটিও ফ্রান্সের বাড়তি প্রেরণার অনুসঙ্গ হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু ম্যাচ শেষে এসব বিশ্লেষণের কোন ‘উপযোগিতা’ নেই! মাঠের লড়াইয়ে অতিরিক্ত সময়ের গোলে ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোর শিরোপা জয় করে রেকর্ড গড়লো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
পর্তুগালের শিরোপা জিততে হলে রোনালদোকে বড় নিয়ামকের ভূমিকা পালন করতে হবে-এমনটিই বলেছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবলের ‘ঈশ্বর’ ম্যারাডোনা। কিন্তু পর্তুগাল যখন ফ্রান্সের জালে বল পাঠিয়ে উৎসব আনন্দে ভাসছিল তখন মাঠেই ছিলেন না রোনালদো!
খেলার মাত্র ২৪ মিনেটেই আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রোনালদোকে। রোনালদো যখন মাঠ ছাড়েন তখন তার দু’চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রুর ফোঁটা। কিন্তু তার সে অশ্রুই প্রেরণার বড় ‘উৎস’ হিসেবে কাজ করেছে সতীর্থদের মধ্যে। অধিনায়কের বিদায়ের শোককেই পরিণত করে শক্তিতে।
অতিরিক্ত সময়ে এদেরের চমৎকার গোলে স্বাগতিকদের হতাশ করে দশম দেশ হিসেবে ইউরোর শিরোপা জিতে নেয় ফার্নান্দো সান্তোসের দল।
২০০৪ সালে গ্রিসের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল স্বাগতিক পর্তুগাল। সেবার পরাজিত দলে ছিলেন রোনালদো। ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম কোনো শিরোপার অপেক্ষা ঘুচলো তার ১২ বছর পর।
ম্যাচ শুরুর মাত্র ৮ মিনিটের মাথায় দিমিত্রি পায়েতের সঙ্গে সংঘর্ষে ব্যথা পেয়েছিলেন রোনালদো। এরপর দুইবার চোটের পরিচর্যায় মাঠের বাইরে যান। তবে এভাবে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত খেলার ২৪তম মিনিটে নিজেই অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড খুলে ফেলেন। চলে যান মাঠের বাইরে। স্ট্রেচারে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হলো রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ডকে।
তবে ফাইনাল ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল একেবারে নিষ্প্রাণ। তবে নিষ্প্রাণ লড়াইয়ে দুইদল কিছু সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি কেউ।
নিষ্প্রাণ প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে যেন শুরু হয় ফাইনালের উত্তেজনা। ৬৫তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে কিংসলে কোমানের ক্রসে দুর্দান্ত হেড করেছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা গ্রিজম্যান। কিন্তু বল একটুর জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়। হতাশায় পুড়তে হয় স্বাগতিকদের।
১০ মিনিট পর খুব কাছ থেকে অলিভিয়ে জিরুদের শট ঠেকিয়ে দেন পাত্রিসিও। ৮০তম মিনিটে নানির ক্রস জালে প্রায় ঢুকে যাচ্ছিল। কিন্তু তৎপর ছিলেন গোলরক্ষক উগো লরিস।
চার মিনিট পর মুসা সিসোকোর দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে আবারও দেন পর্তুগালের রক্ষাকর্তা পাত্রিসিও। তবে যোগ করা সময়ে পরাস্ত হয়েছিলেন তিনি। ভাগ্য ভালো পর্তুগালের; জিরুদের বদলি হিসেবে নামা অঁদ্রে-পিয়েরে জিনিয়াকের শট কাছের পোস্টে লেগে ফিরে। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ দিকে এদেরের হেড ঠেকিয়ে দেন অধিনায়ক লরিস।
১০৮তম মিনিটে পরাস্ত হয়েছিলেন লরিস। তবে রাফায়েল গেররেইরোর ফ্রি-কিক ক্রসবারে লাগে। তবে পরের মিনিটেই আসে জয়সূচক গোলটি। বদলি হিসেবে নামা এদেরের প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া আচমকা নিচু শট ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি লরিস। প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে এটাই এদেরের প্রথম গোল! আর এ গোলেই স্বপ্ন ছুঁয়ে গেছে পর্তুগালের।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু