আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ জুলাই ২০১৬, শনিবার |

kidarkar

আইন মানছে না ২১ মার্চেন্ট ব্যাংক: ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি

merchant-bankশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ইস্যু ম্যানেজমেন্টের লাইসেন্স নেওয়া থাকলেও ইস্যু ম্যানেজারের কাজ না করে আইন অমান্য করছে ২১ মার্চেন্ট ব্যাংক। আর সিকিউরিটিজ আইন অমান্য করেই ব্যবসা পরিচালনা করা এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কমিশন সূত্রে জানা যায়, লাইসেন্সপ্রাপ্ত মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে পাঁচ ধরনের কাজের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান ইস্যু ম্যানেজমেন্ট বা কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধির ব্যবস্থাপনা। প্রতি তিন বছরে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ন্যূনতম একটি ইস্যু ম্যানেজ করার বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। অাইনের এ বাধ্য-বাধকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাঁচ বছর ধরে ২১ মার্চেন্ট ব্যাংকই ইস্যু ম্যানেজমেন্টের কোনো কাজ জমা দেয়নি। এর মধ্যে অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড মার্চেন্ট ব্যাংক হিসেবে শুধুমাত্র ইস্যু ম্যানেজমেন্টের লাইসেন্স নিয়েছিল। অথচ ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ২টি ইস্যু জমা দেওয়ার পর থেকে কোম্পানি আর কোনো ইস্যু ম্যানেজমেন্টের কাজ করেনি।

আইনের তোয়ক্কা না করেই ব্যবসা পরিচালনা করা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই আইনানুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে বিএসইসি’র মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ সাইফুর রহমান শেয়ারবাজারনিউজ ডট কম’কে বলেন, ‘আইন অমান্য করা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কাছে আইন অমান্য করার কারণসহ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে ব্যাখ্যা দিতে হবে। ব্যাখ্যার ওপর নির্ভর করে ব্যবস্থা নেওয়া হব’। সংশ্লিষ্ট ইস্যু ম্যানেজারদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইনানুযায়ীই শাস্তি নির্ধারন করা হবে। কিন্তু তা নির্ভর করছে কোম্পানিগুলো কি ব্যাখ্যা দেয় তার ওপর’।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বা রাইট শেয়ার ইস্যুর কাজকে ইস্যু ম্যানেজমেন্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়। ইস্যু ম্যানেজমেন্ট আইনের তোয়াক্কা না করেই ব্যবসা করা কোম্পানিগুলো হচ্ছে- অগ্রনী ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, এআইবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, বিডি ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল হোল্ডিং, বিএলআই ক্যাপিটাল, ব্র্যাক-ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট, সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস, কসমোপলিটন ফাইন্যান্স, ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট, ইসি সিকিউরিটিজ, এক্সিম ইসলামি ইনভেস্টমেন্ট, ফাস (এফএএস) ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, যমুনা ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, এনবিএল ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট, এনডিবি ক্যাপিটাল, রেস পোর্টফোলিও অ্যান্ড ইস্যু ম্যানেজমেন্ট, রুপালী ইনভেস্টমেন্ট, এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

দেশের পুঁজিবাজারে মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির ঘাটতি রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে সাধারন বিনিয়োগকারীদের। এমন এক সময়েও নির্দিষ্ট কিছু মার্চেন্ট ব্যাংকের বাইরের ইস্যু ম্যানেজাররা ইস্যু ব্যবস্থাপনা না করায় পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। জানা যায়, গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি আইপিও আবেদন জমা দিয়েছে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশনের (আইসিবি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি ক্যাপিটাল। মার্চেন্ট ব্যাংকটি আলোচিত সময়ের মধ্যে ১৭টি আইপিও আবেদন জমা দিয়েছে। এরপরই রয়েছে জনতা ক্যাপিটাল। প্রতিষ্ঠানটি ৮টি আইপিও আবেদন জমা দিয়েছে। এছাড়া এএএ কনসালটেন্টস এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এএফসি ক্যাপিটাল, আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ব্যাঙ্কো ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট, বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট, ফাস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, গ্রীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট, আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল, লঙ্কা-বাংলা ইনভেস্টমেন্ট, এমটিবি ক্যাপিটাল, পিএলএফএস ইনভেস্টমেন্ট, প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট, প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, সোনালী ইনভেস্টমেন্ট, সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিস এবং ট্রাস্ট ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট প্রত্যেকে গত তিন বছরে আইপিও আবেদন জমা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ৫৫টি মার্চেন্ট ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে ৫১টি ফুল ফ্লেজড মার্চেন্ট ব্যাংকিংয়ের কাজ করছে।

শেয়ারবাজারনিউজ/ওহ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.