দুই মিলে এক হচ্ছে রবি-এয়ারটেল
![](https://www.sharebazarnews.com/wp-content/uploads/2016/08/ROBI-AN.jpg)
শেয়ারবাজার ডেস্ক: রবি আজিয়াটা লিমিটেড (রবি) ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড (এয়ারটেল) এ দুই প্রতিষ্ঠান মিলে একটিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। গতকাল এ দুই কোম্পানির একীভূতকরণের ফি ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গত মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অংশগ্রহণে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ ফি চূড়ান্ত করে তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ অনুমোদনের ফলে প্রতিষ্ঠান দুটির একীভূতকরণের প্রক্রিয়া এগিয়ে গেল। এর পর উচ্চ আদালতের কোম্পানি ম্যাটার বেঞ্চে যেতে হবে দুই অপারেটরকে। সেখানে তাদের দেনা-পাওনার বিষয়টি সমাধান হবে। এক্ষেত্রে কারো কোনো আপত্তি না থাকলে আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে বিটিআরসি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, সবার জন্য সহনীয়ভাবে এ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে মতৈক্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে বর্তমানে এয়ারটেলের তরঙ্গ রয়েছে ১৫ মেগাহার্টজ। এ তরঙ্গের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত। ২০১১ সালে নির্ধারিত তরঙ্গমূল্য অনুযায়ী এয়ারটেলের কাছে থাকা টুজি তরঙ্গের পুরোটা নিতে রবির ব্যয় হবে ৫০৭ কোটি টাকা। তবে এটি চূড়ান্ত হবে এয়ারটেলের কাছ থেকে নেয়া তরঙ্গের ভিত্তিতে।
রবি ও এয়ারটেল বাংলাদেশের কার্যক্রম একীভূত করতে গত ২৮ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে তাদের মূল প্রতিষ্ঠান আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদ (আজিয়াটা) ও ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড (ভারতী)। ২৪ জুন পর্যন্ত এ চুক্তির মেয়াদ ধরা হয়। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান দুটি আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একীভূতকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানের সম্মতিতে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
একীভূতকরণের বিষয়ে চূড়ান্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দিতে এরই মধ্যে কয়েক দফা সময় নিয়েছে সরকার। প্রতিবেদন জমা দিতে সরকারকে প্রাথমিকভাবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়। পরবর্তীতে সরকার এ সময় বাড়ানোর আবেদন করলে তা ১১ এপ্রিল নির্ধারণ করা হয়। সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন জমা দিতে দুই দফায় ১৩ এপ্রিল ও ২ মে পর্যন্ত সময় দেন আদালত। ২ মে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হলে সরকার আরো এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করে। তবে আদালত ১৫ মে পর্যন্ত সময় দেন সরকারকে। এর পর আরো এক দফা সময় বাড়িয়ে ৬ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন আদালত। তবে আবারো সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ জুলাই পর্যন্ত আরেক দফা সময় বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে তা আরো এক দফা বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম একীভূত করার সম্ভাবনার বিষয়ে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আলোচনা শুরু করে এয়ারটেল ও রবি। একীভূতকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্নের উদ্দেশ্যে অনুমতি চেয়ে ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আবেদন করে প্রতিষ্ঠান দুটি।
গ্রাহক সংখ্যার ভিত্তিতে দেশের সেলফোন অপারেটরদের মধ্যে রবি ও এয়ারটেল যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। একীভূত হওয়ার পর বাংলালিংককে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে এটি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে রবির গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৪ লাখ ৪২ হাজার ও এয়ারটেলের ৯৮ লাখ ৯২ হাজার।
প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে একীভূত প্রতিষ্ঠানের ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ শেয়ার নিয়ন্ত্রণ করবে আজিয়াটা। ভারতী এয়ারটেলের হাতে থাকবে ২৫ শতাংশ ও বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ শেয়ার থাকবে জাপানের এনটিটি ডোকোমোর কাছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা