সোনালী ব্যাংকের ৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা বেক্সিমকো ও আরএসআরএমের পকেটে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: খেলাপি ঋণের কারণে সবসময় আলোচনায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। বিভিন্ন কারণে কোন সময়েই খেলাপি ঋণ আদায়ে সফলতা দেখাতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি। এরই মধ্যে সম্প্রতি ব্যাংকটির ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা বেক্সিমকো ও আরএসআরএমের পকেটে গিয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কর্তৃত্ব শতভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে না থাকায় এমনটি হচ্ছে। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠান জবাবদিহির জায়গায় নেই। সে কারণে জনগণের টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে নিয়ে যাচ্ছে কিছু প্রতিষ্ঠান।
নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিতরণকৃত ঋণের ৪.৪৩ শতাংশ রয়েছে সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের কাছে। এ প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৭২ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে।
জানা গেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের অধীনে বেক্সিমকো লিমিটেডের কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ফান্ডেড ঋণ এক হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ২৭২ কোটি টাকার পুরোটাই মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে, যা আদায়ের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এছাড়া কোম্পানিটিতে বিনিয়োগকৃত সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ১৩৪ কোটি টাকাও খেলাপি ঋণের তালিকাভুক্ত হওয়ার পথে আছে।
এ ঋণ ব্যাংকটির এসএমএ ঋণের আওতায় নেয়া হয়েছে। পরপর দুই মাস কোনো ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করা হলে সেই ঋণকে স্পেশাল ম্যানশন বা এসএমএ ঋণের তালিকাভুক্ত করা হয়। এরপর ব্যাংক এ ধরনের ঋণের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে। এছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপের বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেডের কাছে সোনালী ব্যাংকের ঋণ রয়েছে ৭৬ কোটি টাকা। তবে এ ঋণ শ্রেণীবিভক্তি করা হয়নি বা নিয়মিত আছে।
আরএসআরএম গ্রুপের মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেড ও রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের কাছে সোনালী ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ৪৬১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১.৩৮ শতাংশ। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৩৭২ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এসব টাকা ঋণের নামে বের করা হচ্ছে। নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয় দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করছে না। সে কারণে এমনটি হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনালী ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বেক্সিমকো নিয়ে আমরা চিন্তিত। গ্রুপটির টাকা ফেরত দেয়ার পরিমাণ সন্তোষজনক নয়।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ