বিএসইসি ও সিডিবিএলের সাইবার নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং সেন্ট্রাল ডিপজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সাইবার নিরাপত্তাকে জোরদার করতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন- ইতিমধ্যে দেখা গেছে অনলাইনে অর্থের তুলনায় তথ্য হ্যাক হচ্ছে বেশি। আর এর জন্যে সরকারের গুরুত্বপূর্ন ২১টি প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে যাদের তথ্যকে সুরক্ষিত করতে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। এই ২১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে এনবিআর, বিএসইসি, সিডিবিএল, বাংলাদেশ ব্যাংক ইত্যাদি। আর সরকারের পক্ষ থেকে আমরা তাদের নিরাপত্তা জনিত যেকোন সহায়তা করে যাচ্ছি এবং করব। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমরা ফিজিক্যাল সিকিউরিটির জন্য অনেক টাকা খরচ করে থাকি কিন্তু সাইবার সিকিউরিটির জন্য তেমন খরচ করি না। আমাদের এখন সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ দরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির বিষয়ে পলক বলেন, সাইবার অ্যাটাকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮১ বিলিয়ন ডলার চুরি হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ক্ষেত্রে যে সাইবার ক্রাইম হয়েছে, তা আমাদের প্রচলিত ধারণার বাইরে। এটি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী সাইবার অ্যাটাক। এ ধরণের অপরাধ রোধে ফিলিপাইন বা অন্য দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করা দরকার। তা না হলে যে কোনো সময় এর থেকেও বড় ধরণের চুরি হওয়া সম্ভব।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পরপরই পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি গ্ররুত্বের সাথে আলোচনায় নেয়। তাই সবার আগে যে প্রতিষ্ঠানের শেয়ার জমা থাকে অর্থাৎ সিডিবিএল-কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশের পর ইলেকট্রনিক উপাত্তের নিরাপত্তা জোরদারে সিকিউরিটিজ ইস্যুয়ার ও ব্রোকারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়েছে সিডিবিএল।
২০১৬ সালের ২২ মার্চ ইস্যু করা এক চিঠিতে ডিপোজিটরি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্টদের বলে, সিডিবিএলের টার্মিনালে প্রবেশাধিকার আছে, এমন প্রতিটি কম্পিউটারকে ইন্টারনেট সংযোগমুক্ত রাখতে হবে। এ ধরনের কম্পিউটারগুলোকে হালনাগাদ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারও ব্যবহার করতে হবে। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার হালনাগাদ করতে অফলাইন আপডেট প্যাক ব্যবহারেরও পরামর্শ দেয়া হয়েছে সবাইকে। এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করবে সিডিবিএলের টেকনিক্যাল টিম।
সিডিবিএল সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের মোট ৪৭৫টি ডিপজিটরি পার্টিসিপ্যান্ট (ডিপি) কোম্পানি রয়েছে। এর বাইরে শেয়ার ও বন্ডের ইস্যুয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোরও সিডিবিএলের টার্মিনালে প্রবেশাধিকার রয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারেও সচেতন হতে বলেছে ডিপজিটরি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সংশ্লিষ্ট সব কর্মীকে প্রশিক্ষিত করার কথাও বলা হয়েছে ইস্যুয়ার-ব্রোকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
সিডিবিএলের একজন কর্মকর্তা জানান, ইলেকট্রনিক তথ্যের নিরাপত্তাবিধানে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে সিডিবিএলের। ডিপি ও ইস্যুয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর করণীয় স্মরণ করিয়ে দিতেই সম্প্রতি তাদের বিভিন্ন নির্দেশনাসংবলিত চিঠি দেয়া হয়।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু