এক্সপোজার বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে বৈঠক: ব্যবস্থা নিতে বিবি’কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজারের সংজ্ঞা পরিবর্তনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনেক আগেই প্রস্তাব পাঠিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ)। দীর্ঘদিন পর অবশেষে গতকাল এ বিষয়কে কেন্দ্র করে গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থমন্ত্রনালয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে এক্সপোজারের বিষয়ে দ্রুত সমাধান করতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া এক্সপোজার ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠি বিবিতে পাঠানো হয়েছে।
আজ ডিএসইতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবিএ প্রেসিডেন্ট মোস্তাক আহমেদ সাদেক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ডিবিএ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক, সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আহসান উল্লাহ, বিএমবিএ’র সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী, ডিবিএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন এবং সহ-সভাপতি ড. জহির।
ডিবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখা তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এক্সপোজার ইস্যুতে যেসব প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেন জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।
বিএমবিএ’র সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, এই প্রস্তাবনাগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক মেনে নিলে অচিরেই পুঁজিবাজারে প্রাণ ফিরে আসবে। এটি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের শুধুমাত্র একটি সার্কুলারই যথেষ্ট বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে এক্সপোজার ইস্যুতে বাংলাদেশকে ব্যাংকে যেসব প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে সেগুলো হলো:
ক. পুঁজিবাজারে এক্সপোজার গণনার সহজ ও পুঁজিবাজার বিকাশে সহায়ক করা:
১. ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (সংশোধিত ২০১৩) এর বাধ্যবাধকতার বাইরেও নতুন করে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলার এর মাধ্যমে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ সীমা হিসাবায়নের ক্ষেত্রে সমন্বিত (consolidated) ভিত্তি ঘণনা করার বিষয়টি আরোপিত হয়েছে। যার কারণে পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহের ক্ষেত্রটি অধিকতর সংকোচনমূলক হয়েছে। এমতাবস্থায় ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৬ক ধারা অনুসারে একক solo ভিত্তিতে এক্সপোজার ঘণনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (সংশোধিত ২০১৩) এর ধারা ২৬ক তে প্রযোজ্য সকল সিকিউরিটিজের বাজার মূল্য অন্তর্ভূক্ত করার বিধান রয়েছে। এ কারণে, যে সকল সকিউরিটিজের বাজার মূল্য নেই তাদেরকে অন্তর্ভূক্ত না করা অর্থাৎ পুঁজিবাজাকরে তালিকাভুক্ত নয়, যেমন বন্ড, ডিভিঞ্জার, প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ার ও অতালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে এক্সপোজার হিসারেব বাহিরে রাখা।
৩. কৌশলগত বিনিয়োগ, যা পুরো মেয়াদকাল পর্যন্ত ধারণকৃত এবং যেসব বিনিয়োগকৃত সিকিউরিটিজের কোন লেনদেন হয় না, সেসব সিকিউরিটিজকে এক্সপোজার গণনা হতে বাদ দেয়া।
৪. পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের পুঁজিবাজার এক্সপোজার লিমিট গণনা করার ক্ষেত্রে বাজার মূল্য (mark to market) অনুযায়ী না ধরে ক্রয় মূল্যের ভিত্তিতে গণনা।
৫. ব্যাংক তার পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারিকে প্রদত্ত ঋণের যে অংশ ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করে তা পুঁজিবাজার এক্সপোজার হিসেবে গণনা না করে শুধুমাত্র উক্ত ঋণের যে অংশ পুঁজিবাজারের বিভিন্ন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয় তাই উক্ত ব্যাংকের প্রকৃত পুঁজিবাজার এক্সপোজার হিসেবে হিসাবায়ন করা।
খ. আইসিবি এর বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ:
ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (ICB) বিশেষ উদ্দেশ্যে গছিত একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান, যা পুঁজিবাজারের প্রয়োজনে সহায়তা (support) দিয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের “সিংগেল পার্টি এক্সপোজার” গণনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে আইসিবি পুঁজিবাজারের বিনেয়োগ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। সুতরাং আইসিবিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের “সিংগেল পার্টি এক্সপোজার” হিসেবে গণনা করার বিষয় পুন:বিবেচনা করা।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা