তিন সিটি নির্বাচন, নতুন ছক করছে ইসি
শেয়ারবাজার ডেস্কঃ কুমিল্লা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করে প্রসংসা কুড়িয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু গাজীপুরে ভোটে অনিয়মের আভিযোগ করে পর্যবেক্ষকসহ বিভিন্ন মহল। একরণে রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল সিটিতে সুষ্ঠু ভোট করে দুই সিটির অভিযোগ ঘোচাতে চায় ইসি।
সূত্র জানায়, খুলনা ও গাজীপুরের ভোটের পর রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে এবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) নতুন ছক তৈরি করছে। এ ছকের মধ্যে রয়েছে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিজিবি এবং র্যাব সদস্য মোতায়েন। চার দিন মাঠে থাকবে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এমনই তথ্য জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ১২ জুলাই বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বৈঠক ডেকেছে ইসি। সেদিন পুলিশের আইজি, র্যাবের ডিজি, বিজিবি, আনসার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন নির্বাচন কমিশনাররা। এছাড়া তিন সিটির রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন-পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়েই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের ছক চূড়ান্ত করবে ইসি।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, ভোটের আগের দুই দিন থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। ওই তিন সিটিতে দলীয় প্রতীকে প্রথম সিটি ভোট হওয়ায় এখানে বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বেশি হারে পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে। নির্বাচন কমিশনের আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা করতে যাচ্ছে ইসি সচিবালয়। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় বলা হয়, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রাখা যেতে পারে।
এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স এবং প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে র্যাবের টিম এবং বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের দুই দিন আগে, ভোটের দিন এবং ভোটের পরে একদিন মিলিয়ে চার দিন মাঠে থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র্যাব-পুলিশের টিম ও কয়েক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে সংরক্ষিত রাখার সুপারিশও করেছে ইসি সচিবালয়।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষে প্রচারণা শুরু হলেই প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী হাকিম মাঠে থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামার পর তাদের নেতৃত্বেও থাকবে নির্বাহী হাকিম। এ সময় তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে বিচারিক হাকিমও নিয়োগ করবে ইসি।
সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর টার্গেট থাকবে যে কোনো মূল্যে জয়লাভ করা। এতে করে বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে এ তিন সিটির নির্বাচনে। এ পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলাসহ সব ক্ষেত্রে নতুন ছক করছে ইসি। রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ও সাধারণ আসনের কাউন্সিলরদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ২৮ জুন। রিটার্নিং অফিসার ১ থেকে ২ জুলাই মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ জুলাই। ৩০ জুলাই ভোটগ্রহণ হবে।
এদিকে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটিতে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার ২৩ প্রার্থী মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে রাজশাহীতে ছয়জন, সিলেটে আটজন ও বরিশালে নয়জন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু