আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ জানুয়ারী ২০১৯, সোমবার |

kidarkar

প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে বিব্রত সরকার, আসছে নতুন কৌঁশল

শেয়ারবাজর ডেস্ক: বিভিন্ন সময় যেসব প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে তা নিয়ে বিব্রত বর্তমান সরকার। মন্ত্রনালয়ে মন্ত্রী বদল হওয়ার পর এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে নতুন নতুন কৌঁশল নিচ্ছে সরকার।

জানা যায়, ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ থেকে সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। গেলবার এ পরীক্ষায় প্রায় সব বিষয়ে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছিল সরকার।

এ কারণে আসন্ন এ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার সিকিউরিটি টেপ ব্যবহার না করে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপারের খামে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। খাম খোলা হলে ধরা পড়তে হবে।

শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে মন্ত্রণালয় যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে তা প্রশংসনীয় এবং ইতিবাচক। তবে আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা নির্ভর হওয়ায় জিপিএ-৫ এর পেছনে ছুটতে গিয়ে অভিভাবকরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ‘অনৈতিক কাজে’ লিপ্ত হচ্ছেন। এজন্য পাবলিক পরীক্ষায় পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনা দরকার। উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার জন্য এত বেশি পাবলিক পরীক্ষা বাদ দিতে হবে। তারা পরীক্ষা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনার পক্ষে মত দেন।

জানা গেছে, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (তত্ত্বীয় পরীক্ষা) চলবে। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। এবার সর্বমোট ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬০ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে দাখিলে অংশ নিচ্ছে ৩ লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন। এসএসসি ভোকেশনালে পরীক্ষা দেবে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২ জন। সারা দেশে মোট পরীক্ষা কেন্দ্র ৩ হাজার ৪৯২টি।

এবার প্রশ্নফাঁস রোধে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। কেবল কেন্দ্র সচিব ক্যামেরাবিহীন ও ইন্টারনেট সংযোগ পায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষা কেন্দ্রের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। এছাড়া পরীক্ষা ও প্রশ্ন বহনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ কোনো মোবাইল ফোনই ব্যবহার করতে পারবেন না। পরীক্ষার কাজে জড়িত নন এমন কেউ কেন্দ্রে যেতে পারবেন না। এসব নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি পেতে হবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনাসহ নানা উদ্যোগের কথা বলছেন বিশ্লেষকরা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অনৈতিক কাজের দিকে ঝোঁকে। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সরকার শাস্তির ব্যবস্থা করবে, নীতিমালা করবে, আইন করবে, কিন্তু অভিভাবকদের অনৈতিকতা বর্জন করতে হবে। কারণ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া মুখ্য বিষয় নয়।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি আমাদের যে ব্যবস্থাটা নিতে হবে, সেটা হচ্ছে পরীক্ষা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার জন্য এত বেশি পাবলিক পরীক্ষা বাদ দিতে হবে।’

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা প্রশংসনীয় এবং ইতিবাচক। তবে আমাদের মূল্যায়ন ব্যবস্থাটা যথাযথ হচ্ছে না। আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরীক্ষার ফল নির্ভর করেছি, অর্থাৎ জিপিএ-৫ নির্ভর। এটা ঠিক না।’

তিনি বলেন, ‘জীবনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের কতটুকু দক্ষতা অর্জন করাতে পারছি, সেটা হলো মূল কথা। এ জন্য আমার একটা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকবে, সেটা হচ্ছে একটা জাতীয় পরীক্ষা নীতি করা। কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন এবং ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে সেটা করে পরীক্ষা ব্যবস্থাটাকে সংস্কার করতে হবে।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.