আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২০ মে ২০১৫, বুধবার |

kidarkar

সাগরেভাসা অভিবাসীকে আশ্রয় দেবে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া

indoশেয়ারবাজার ডেস্ক: সাগরে ভাসমান বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অভিবাসীদের সাময়িক ভিত্তিতে আশ্রয় দেবে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। বুধবার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে দেশ দুটি। কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে মানবিক বিবেচনায় অস্থায়ী ভিত্তিতে সাগরে ভাসমান অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।

সাগরপথে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াগামী হাজারো অভিবাসী নিরুদ্দেশ নৌকায় ভাসছে। আন্দামান সাগর এবং মালাক্কা প্রণালিতে ভাসতে থাকা এসব অভিবাসীর জীবন ভয়ানক ঝুঁকিতে পড়েছে। খাবার ও পানীয় জলের তীব্র সংকটে রয়েছে তারা। মাঝে মাঝে মৃত্যুর সংবাদও আসছে। এই অবস্থায় মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার আশ্রয় দেওয়ার এই উদ্যোগ প্রাণে বাঁচাবে হাজার হাজার সাগরভাসা অভিবাসীকে।

বৈঠক শেষে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিফা আমান জানিয়েছেন, তার দেশ ও ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী ভাসমান নৌকাগুলো যেভাবে তাদের জলসীমা থেকে অন্য অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তা আর হবে না।  এসব মানুষকে আমাদের সাহায্য করা দরকার। এই অবস্থায় শর্ত মেনে অভিবাসীদের আমাদের কূলে ভিড়তে দেওয়া হবে।’ দীর্ঘদিন সাগরে ভাসতে থাকা আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের অধিকাংশই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম এবং বাংলাদেশের দরিদ্র লোকজন।

আনিফা আমান বলেন, ‘সাগরেভাসা ৭ হাজার অভিবাসীকে আশ্রয় দেবে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। অস্থায়ী ভিত্তিতে আশ্রয় দেওয়া এসব অভিবাসীকে আগামী এক বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’

এদিকে বুধবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার উপকূল থেকে ৪৫০ জন ভাসমান অভিবাসীকে ইন্দোনেশিয়ার জেলেরা উদ্ধার করে কূলে নিয়ে যায়। তাদের পূর্ব আচেহ জেলার একটি গ্রামে থাকতে দেওয়া হয়েছে। সাগরে ভাসমান হাজারো অভিবাসীকে আশ্রয় দিতে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার প্রতি আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে গড়িমসি করায় এই তিন দেশের সমালোচনা করে জাতিসংঘ। অবশেষে এক জরুরি বৈঠক থেকে অভিবাসীদের আশ্রয় দিতে সম্মত হলো দেশ তিনটি।

তবে একটি বিষয় পরিষ্কার করেননি আনিফা আমান। তা হলো- যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহযোগিতার হাত না বাড়ায় তাহলে অভিবাসীদের গ্রহণ করা হবে কি না এবং মানবিক সাহায্য দেওয়ার প্রক্রিয়া কখন থেকে শুরু হবে।

আরও একটি বিষয় নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। সাগরে ভাসমান অভিবাসীর সংখ্যা ৭ হাজার- এই হিসাব সংশ্লিষ্ট তিন দেশ কীভাবে করল বা কোথা থেকে পেল, তা জানানো হয়নি। কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ভাসমান অভিবাসীর সংখ্যা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে। কেউ বলছে এই সংখ্যা ৪ হাজারের মতো। আবার কেউ বলছে তা ৬ হাজারের বেশি নয়।

প্রতিবেশী দেশগুলোকে অভিবাসী বাঁচানোর উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আনিফা আমান।  বুধবারের বৈঠকে থাইল্যান্ড অংশ নিলেও অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়নি তারা। তাদের ভাষ্য, এরই মধ্যে মিয়ানমারের হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে চাপে রয়েছে তারা। নতুন করে আর কোনো অভিবাসীর চাপ নিত পারবে না।

অভিবাসীরা বিশ্বাস করে, যেকোনো উপায়ে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া পৌঁছাতে পারলেই চাকরি জুটে যাবে, বদলে যাবে ভাগ্য। যে কারণে জীবন বাজি রেখে মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে সাগরপথে রওনা হয় অভিবাসীরা। এভাবে যেতে গিয়ে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। থাইল্যান্ডে গণকবর উদ্ধারের পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/অ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.