আইপিওর অর্থ ‘অপব্যবহার’ এস্কয়ার নিটের, তদন্ত করছে বিএসইসি
আতাউর রহমান শেয়ারবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার না করার অভিযোগ উঠেছে এস্কয়ার নিট কম্পোজিটের বিরুদ্ধে। সেই অর্থের অপব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
২০১৯ সালের শুরুতে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির মাধ্যমে বাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে এস্কয়ার নিট কম্পোজিট। উত্তোলিত অর্থ থেকে ভবন নির্মাণের জন্য ১০০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং কারখানায় যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য ৪৩ কোটি টাকা ব্যয় করার কথা ছিল।
তবে কোম্পানির বিরুদ্ধে আইপিওর অর্থ নিয়মানুযায়ী ব্যবহার করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিশেষ নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। একইসঙ্গে বিশেষ নিরীক্ষার জন্য হাওলাদার ইউনুস অ্যান্ড কোম্পানিকে নিরীক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়। নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেয়। এবং প্রতিবেদনে বেশকিছু অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে বর্তমান কমিশন কোম্পানির অনিয়মের বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য সম্প্রতি তিন সদস্যেরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে রয়েছেন বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. মিরাজ উস সুন্নাহ, সহকারী পরিচালক মো. বনি ইয়ামিন খান এবং সহকারী পরিচালক তোহিদ হাসান।
তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে জমা দেবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, এস্কয়ার নিট কম্পোজিটের আইপিওর অর্থ ব্যবহারে বিভিন্ন অনিয়ম, অসঙ্গতি থাকলেও কোম্পানির নিয়োগ করা নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান মেসার্স মালেক সিদ্দিকী ওয়ালী, চার্টাড অ্যাকাউন্টেন্টস আর্থিক প্রতিবেদনে কোনো ধরনের মতামত দেয়নি। কিন্তু কমিশন থেকে নিয়োগ করা বিশেষ নিরীক্ষক মেসার্স হাওলাদার ইউনুস অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টস আর্থিক প্রতিবেদনে বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এস্কয়ার নিটের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাই এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
এছাড়া আইপিওর অর্থ দিয়ে ১০০ কোটি টাকায় ভবন নির্মাণে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান পিনাকল কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডকে দিয়ে কাজ করিয়েছে এস্কয়ার নিট। আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস) অনুযায়ী স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেনের বিষয়টি আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু কোম্পানির কোনো আর্থিক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত কোনো বিষয় উল্লেখ করেনি।
২০১৯ জুলাই থেকে নয় মাসে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ২.৪০ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ৪.১৭ টাকা ছিল।
৩০ জুন ২০১৯ শেষে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
শেয়ারবাজার নিউজ/ আতাউর রহমান