ব্যাংকগুলোর সেল প্রেসার আতঙ্ক: চলছে সময় বাড়ানোর জোর প্রচেষ্টা
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারের নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজারের সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হলেও বাজারে গুজব রটেছে যে এই সময় আর বাড়ানো হচ্ছে না। যদি পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ কমিয়ে আনার সময় না বাড়ানো হয় তাহলে ব্যাংকগুলোকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করতে হবে। এতে বাজারে সেল প্রেসার বেড়ে যাবে। ফলশ্রুতিতে বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। ব্যাংকগুলোর এই সেল প্রেসার আতঙ্কে আজ ১৪ জুন সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নির্দিষ্ট সীমায় নামিয়ে আনার যে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে তা বাড়ানোর জন্য পুঁজিবাজারের বিভিন্ন মহল থেকে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ব্যাংক উদ্যোক্তা সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ইত্যাদি স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজারের সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এখন বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে অর্থমন্ত্রনালয়ের উপর। মন্ত্রনালয় চাইলে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজারের সময় আরও বাড়িতে দিতে পারে। পুঁজিবাজার তথা লাখো বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সরকার এই সময় আরও বাড়িয়ে দেবে এমনটাই প্রত্যাশা বাজার সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে বলা হয়েছে যে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ইক্যুইটির ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। ব্যাংকের ইক্যুইটি বলতে আদায়কৃত মূলধন,শেয়ার প্রিমিয়ামে রক্ষিত স্থিতি,সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিকে বুঝানো হয়। গত ৩১ মে পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইক্যুইটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার কোটি টাকা। যার ২৫ শতাংশ হচ্ছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে না। কিন্তু ইতিমধ্যেই ব্যাংকগুলো প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। অর্থাৎ আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলো প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বেশি বিনিয়োগ করেছে। তাই এ বিনিয়োগ কমিয়ে আনার জন্য ২০১৬ সালের ২১ জুলাই ডেডলাইন বেঁধে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আগামী ১ বছরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে বের করে নিতে হবে। এতে বাজারে ব্যাপক সেল প্রেসার তৈরি হবে। আর এই সেল প্রেসারে পুঁজিবাজারে বড় ধরণের ধস নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ কারণেই নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন মহল থেকে এই সময় বাড়ানোর জন্য জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে সরকার চাইলে এ সময় আরও বাড়ানো যাবে। তাই পুঁজিবাজারের আরেকটি ধস যেন না হয় সে কারণে সরকারের পক্ষ থেকে এই সময় আরও বাড়ানো হবে এমনটাই প্রত্যাশা বাজার সংশ্লিষ্টদের।
শেয়ারবাজারনিউজ/সা/ও.র