মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা
শেয়ারবাজার ডেস্কঃ মিয়ানমারে সেনার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। এই পরিস্থিতিতে দেশটির সেনাবাহিনীর উপর চাপ সৃষ্টি করে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলো আমেরিকা।
এই নিষেধাজ্ঞা দেশটির সেনা কর্মকর্তা, তাদের পরিবারের সদস্য ও তাদের সঙ্গে জড়িত ব্যবসার ওপর কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমার সরকারের রাখা একশ কোটি ডলার অর্থ যেন সামরিক সরকার না পেতে পারে সে বিষয়েও পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে মার্কিন সরকার।
অভ্যুত্থান পরিবর্তন করে অন সান সু চি কে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বাইডেন বলেন, মিয়ানমারের জনগণ তাদের কণ্ঠস্বর শোনাচ্ছে এবং বিশ্ব তা দেখছে। প্রতিবাদ বাড়ছে, যারা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য এবং আমরা এর বিরুদ্ধে সমালোচনা অব্যাহত রাখব।’
তার ভাষ্যমতে, এ সপ্তাহে তার প্রশাসন অবরোধের প্রথম ধাপের লক্ষ্যগুলো চিহ্নিত করবে। যদিও রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সহিংসতার দায়ে ইতোমধ্যেই মিয়ানমারের কিছু সামরিক নেতাকে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে গতকাল নেপিদোতে বিক্ষোভকারী এক নারী মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে দায়িত্ব নেয়ার পর এটি বাইডেনের প্রথমবার কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনা।
গত ১ তারিখ মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে বন্দি হন আং সান সু কি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট-সহ অনেকেই। সেনা জানায়, আপাতত এক বছরের জন্য ক্ষমতা দখল করেছে তারা। অভ্যুত্থানের পক্ষে সেনাবাহিনীর যুক্তি, বিগত নির্বাচনে বিস্তর কারচুপি হয়েছে। তাই করোনা আবহে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্বনেতারা। তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন সু চিসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
মিয়ানমারে গত নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বিপুল জয় পায়। এরপর থেকেই মূলত সংকট ঘনীভূত হতে থাকে। সেনাবাহিনী ও সেনাসমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি নির্বাচনের পর থেকেই ভোটে কারচুপির অভিযোগ করে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার দেশটির নির্বাচন কমিশন এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। গতকালই মিয়ানমারের নবনির্বাচিত পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন বসার কথা ছিল। এর কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে।
প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে সামরিক শাসন চলা মিয়ানমার ২০১৫ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের সুবাস পেতে শুরু করে। গত নভেম্বরের নির্বাচনে সেটা কিছুটা ভিত্তি পায়। কিন্তু গতকাল আবার সামরিক জান্তার কবলে চলে গেল দেশটি।
শেয়ারবাজার নিউজ/মি