আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৯ জুন ২০১৫, শুক্রবার |

kidarkar

কাঙ্খিত জিডিপি অর্জনে পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে হবে: এডিবি

adb bankশেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী ও টেকসই করতে এবং কাঙ্থিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে পুঁজিবাজারকে আরও কার্যকর করতে হবে। বেসরকারি খাতের শিল্পায়ন ও উৎপাদন বাড়াতে পুঁজিবাজারকে গতিশীল না করে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে মনে করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সম্প্রতি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পূনর্গঠন ও গুরুত্ব সম্পর্কে এডিবির এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। এডিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এডিবির গবেষণায় বলা হয়, ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করতে বিনিয়োগ ঘাটতি কমাতে হবে। আর এক্ষেত্রে পুঁজিবাজার গতিশীল হওয়া আবশ্যক। এ লক্ষ্য অর্জন করতে হলে প্রথমেই বাজারের সার্বিক পুনর্গঠনে জোর দিতে হবে।

এডিবি’র প্রকল্পের শর্তগুলো পরিপালনের ফলশ্রুতিতে বাজার আগের তুলনায় অনেকটাই স্থিতিশীল হয়ে এসেছে। এমনকি এ সময়ের মধ্যে ৭ জুনে ২০১৫’তে বাজার মূলধন প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে ৪১.১ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়ায়। যা ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর পাশাপাশি বাজারে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার ২৮.৮ শতাংশ থেকে নেমে এ সময়ের মধ্যে ১৩.৫ শতাংশে নেমে আসে।

এসব উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএসসিও স্ট্যান্ডার্ডে বিএসইসি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পেরেছে। এডিবি এখন তাই বাজারকে স্থিতিশীল ও টেকসই করার লক্ষ্যে তৃতীয় বারের মত সিএমডিপি-৩ প্যাকেজের মাধ্যমে নতুন ফান্ড গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১০ সালের ধ্বসে দেশের পুঁজিবাজারের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো প্রকটভাবে নজরে আসে। এরপর ২০১২ সালে সরকারী নীতি-নির্ধারকরা এডিবি’র সাথে বাজার পূনর্গঠনে কাজ শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে এডিবি বাজার স্থিতিশীল করতে সিএমডিপি-১ ও সিএমডিপি-২ নামে বড় ধরনের দুটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে।

এডিবি’র প্যাকেজগুলোর মাধ্যমে মূলত দুটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। প্রথমত, দেশের আর্থিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারকে ভূমিকা রাখতে হবে। এর পাশাপাশি বাজারকে শুধুমাত্র প্রমোট করলেই হবে না, এ বাজারকে দীর্ঘ-মেয়াদী সময়ের জন্য টেকসই করতে হবে।

আর সাফল্য এসেছে তিনটি দিক থেকে। প্রথমত সরকারের পক্ষ থেকে বাজার টেকসই করার অংশিদারিত্ব অর্জন। দ্বিতীয়ত গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বাজার সংশ্লিষ্ট স্টেক-হোল্ডারদের সাথে বিনিয়োগকারীদের যথাযথ যোগাযোগ সাধন করা সম্ভব হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বাজার উন্নয়নে এক কাতারে দাঁড় করানো গিয়েছে।

বাজার উন্নয়নে এডিবির প্যাকেজের শর্ত অনুযায়ি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো টেকসই উন্নয়নে বেশকিছু পরিবর্তন এনেছে। এডিবির মূল্যায়নে ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন বাজারের স্বচ্ছতা আনয়নে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং অর্থমন্ত্রনালয়ের তদারকিতে এ প্রক্রিয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় আরও দক্ষতা অর্জন সম্ভব হয়েছে।

এডিবি’র তদারকিতে বন্ড বাজারে উন্নয়ন সাধন সম্ভব হয়েছে। ঝুঁকিমুক্ত ও বড় পরিমানের অর্থায়নে বন্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে এমন সম্ভাবনা থাকায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ড বাজারকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।

এর পাশাপাশি অর্থমন্ত্রনালয়, বিএসইসি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় সাধন করা সম্ভব হয়েছে। বিএসইসি’তে স্টেট-অব-দ্যা আর্ট সার্ভিলেন্স সিস্টেম চালু করা সম্ভব হয়েছে।

বীমা শিল্পের উন্নয়নে নতুন করে বীমা আইন প্রণয়নে সার্বিক সহযোগিতা করে বীমায় স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব হয়েছে। এর ফলশ্রু‌তি‌তে ব্যবসায় স্বচ্ছতা আনার স্বার্থে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগে বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছিল বলে এডিবির গভেষণায় উঠে আসে।

এ বিষয়ে এডিবির সাউথ এশিয়া বিভাগ, পাবলিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড ডিভিশন, ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরের সিনিয়র ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর বিশেষজ্ঞ সৈয়দ আলী মুনতাজ এইচ শাহ শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নে ইতিমধ্যে এডিবি দ্বিতীয়বারের মতো ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা প্রদান করেছে। তৃতীয়বারের মতো আরো ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেয়া হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হলে পুঁজিবাজারকে গুরুত্ব দিতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা বাংলাদেশের রয়েছে তা বাস্তবে পরিণত করতে হলে পুঁজিবাজার উন্নয়নের বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/ও/সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.