আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২২ জুন ২০১৫, সোমবার |

kidarkar

স্পিকার থাকাকালীন ফ্রিস্টাইলে বক্তব্য দিলেও এখন বন্দি: রাষ্ট্রপতি

abdul hamidশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ‘প্রাণ খুলে’ কথা না বলার বিষয়ে আবারও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার থাকার সময় স্বাধীন-ফ্রিস্টাইলে বক্তব্য দিতাম। এখন অনেকটা বন্দি।

সম্প্রতি ঢাকায় ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো-২০১৫’এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার শুরুতেই এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতে আবদুল হামিদ বলেন, “আমার একটি লিখিত বক্তব্য আছে।এর বাইরে আমি কিছু বলতে পারিনা। আগে জাতীয় সংসদের স্পিকার থাকার সময় স্বাধীন-ফ্রিস্টাইলে বক্তব্য দিতাম। এখন অনেকটা বন্দি জীবনের মতোই। কথা-বার্তা হিসাব করে বলতে হয়। সাংঘাতিক…ফাউল না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হয়।”

স্বভাবসুলভ সহজ ভাষায় কথা বলার জন্য আবদুল হামিদ এমনিতেই সবার প্রিয়। তার এসব কথা শুনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই জোরে হাততালি দিয়ে হেসে ওঠে।

গত ২৬ এপ্রিল নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে লিখিত বক্তব্যের বাইরে কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। ওই অনুষ্ঠানে ভিডিও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সাড়া পড়ে।

রাষ্ট্রপতি হয়ে বঙ্গভবনের বাসিন্দা হওয়ার পর নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন নিয়ে এর আগেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির মেয়াদের এক বছর পূর্তিতে বঙ্গভবনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইচ্ছা করলেই অনেক কিছুই করতে পারি না। আর ইচ্ছা করতেও তো অনেক সমস্যা। গ্রাসরুটে রাজনীতি করা মানুষের জন্য এ জায়গাটা সব সময় আরামদায়ক হবে বলে মনে হয় না।”

আবদুল হামিদ বলেন, “খাঁচার পাখিরে যতই ভালো খাবার দেয়া হোক না কেন, সে তো আর বনের পাখি নয়। আমি একটা দায়িত্ব হিসেবে এখানে এসেছি। সংসদে মনের খোরাক পেতাম, বঙ্গভবনে পাই না। মনটা অনেক কিছু চায়।

তিনি বলেন, মনে হলো কারো বাসায় যাবো। হাফ এন আওয়ারের মধ্যে গাড়ি রেডি হবে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ হবে। যে বাসায় যাবো সেখানকার রান্নাঘর থেকে শুরু করে সব কিছু চেক হবে। ইচ্ছা হইলেও ইচ্ছা করা যায় না। নিতান্তই বিশেষ প্রয়োজন বা সরকারি কোন অনুষ্ঠান ছাড়া বের হই না। বাইরে যদিও যাই ১০টা মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারি না। ওখানেও নিরাপত্তা কর্মী থাকে। আই এম নট ফ্রি।

তিনি আরও বলেন, যখন কোর্টে প্র্যাকটিস করতাম চেম্বারে মানুষ আসতো। কথা বলতাম। যদি কখনো না আসতো, তবে যেখানে আড্ডা হতো, সেখানে চলে যেতাম। সংসদেও আড্ডা দিতাম। এমপিরা আসতো, সাংবাদিকরা আসতো। এখানে সে সুযোগ নেই। মনটা অনেক কিছু চায়। চাইলেও আসলে এখানে পারসোনাল, প্রাইভেট লাইফ নেই। বিদেশে গেলেও শান্তি পাই না। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর প্রথম যে বার গেলাম, ভাবলাম কিছুটা হলেও ফ্রি। কিন্তু সেখানেও একা থাকতে দেবেনা। নিরাপত্তাকর্মীরা সঙ্গে থাকে। আই এম নট অ্যাট অল ফ্রি ম্যান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমার তেমন কোনো কাজ নেই। যেটা করি রুটিন কাজ।  সংসদে থাকার সময়ে অনেক কিছু পরিকল্পনা করেছি। এটা-ওটা বাদ দিয়েছি। এখানে দেখার কিছু নেই।

অবশেষে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়ন্ত্রিত জীবন সম্পর্কে একটা গল্পের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, একটা লোককে বলা হলো কিল কয়টা খাবি? বললো-একটাও না। যদি বাইন্ধা মারি তবে? তখন যত খুশি। বুঝেছেন…!

উল্লেখ্য, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন পেরিয়ে আসা আবদুল হামিদ আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এর আগে জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার ও স্পিকার ছিলেন তিনি।

 

শেয়ারবাজারনিউজ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.