আজ: রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২০ জুন ২০২১, রবিবার |

kidarkar

স্বাভাবিক লেনদেনে শেয়ারবাজারে স্বস্তি

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের পুঁজিবাজারকে বিনিয়োগবান্ধব করতে শেয়ার দরের প্রান্তসীমা তথা ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে আজ রোববার ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হয়ে পুঁজিবাজারে প্রথম লেনদেন হয়। এদিন শুরুর দিকে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত উত্থানেই শেষ হয়েছে লেনদেন।

জানা গেছে, করোনার মহামারিতে পুঁজিবাজারে দরপতন ঠেকাতে ২০২০ সালের মার্চে প্রতিটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়। এর আগে দুই দফায় কিছু কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পর গত বৃহস্পতিবার বিএসইসি তৃতীয় পর্যায়ে পুঁজিবাজারের সব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বাতিল করে। ফলে রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ফ্লোর প্রাইসহীন লেনদেন হয়েছে।

ধারণা করা হয়েছিল, কোনো কোম্পানিতে ফ্লোর প্রাইস না থাকায় পুঁজিবাজারে ধাক্কা লাগতে পারে। কিন্তু মেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক লেনদেনেই দিন শেষ হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারের লেনদেন ও সূচকের ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেলে গত ৭ এপ্রিল ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। তবে তার পর দিন ঢালাওভাবে বাজারে পতন হয়। কমেছিলো সূচকও। তখন কিছুটা আতঙ্ক দেখা দিলেও তা স্থায়ী হয়নি। ফলে ফ্লোর প্রাইস ওঠা ৬৬ কোম্পানির বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর উঠে আসে ফ্লোর প্রাইসের ওপরে।

৩ জুন দ্বিতীয় দফায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি আরও ৩০ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বাতিল করে। তবে এবার ফ্লোর প্রত্যাহারের ফলে ঢালাও শেয়ার বিক্রি দেখা যায়নি। কিছু কোম্পানির শেয়ার দর কমলেও পরবর্তী কয়েক দিনেই এসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের পাশাপাশি দরও বেড়েছে।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বাতিল করা হয়। বিএসইসির এমন সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা ছিল, পরবর্তী প্রথম কার্যদিবস রোববার ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের ফলে বড় ধরনের পতন হবে পুঁজিবাজারে।

কিন্তু রোববার লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। বরং আগের কার্যদিবসের মতো স্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। সূচকও বেড়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ গণমাধ্যমে বলেছেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে বিনিয়োগকারীদের তারল্য এতদিন আটকে ছিল। এখন সেগুলো মুক্ত হয়েছে। যেসব কোম্পানির অনেক বেশি ফ্লোর প্রাইস ধরা হয়েছিল, সেগুলোর কোনো লেনদেন হতো না, এখন হবে।

তিনি বলেন, যারা বেশি দামে শেয়ার কিনেছিল, তাদের জন্য ফ্লোর প্রাইস ভালো ছিল। কিন্তু যারা পুঁজিবাজারে নিয়মিত শেয়ার কেনাবেচা করেন, তারা লেনদেন হওয়া কোম্পানিতেই বিনিয়োগ করেন। ফলে এখন আর কারো তারল্য আটকে থাকবে না। লেনদেনের মাধ্যমে যৌক্তিক দামে শেয়ার কেনাবেচা করা যাবে।

বাজার পরিস্থিতি

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণেও কমেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ৬৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক দশমিক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৯৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ২০৭ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৭৩ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৬ টির, দর কমেছে ১৭৯ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮ টির।

ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা টাকার। যা আগের দিন থেকে ১১ কোটি ৯১ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৪৭ কোটি ১৬ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৯৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ৩০৪টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৩টির আর ৩৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৫৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

১ টি মতামত “স্বাভাবিক লেনদেনে শেয়ারবাজারে স্বস্তি”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.