আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১২ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার |

kidarkar

মোবাইল ব্যাংকিং: লেনদেনের সিংহভাগ তিন কোম্পানির

রাসেল মাহমুদ: ২০১১ সালের মার্চে দেশে মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) চালু হয়। বর্তমানে ১৫টি প্রতিষ্ঠান এই সেবা দিচ্ছে। তবে এ খাতের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে দুই থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠানের হাতে। নির্দিষ্ট করে বললে- লেনদেনের সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করছে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ, ডাক বিভাগের নগদ এবং ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের রকেট।

এই তিন প্রতিষ্ঠানের বাইরে মাইক্যাশ, এমক্যাশ, ট্রাস্ট আজিয়াটা পে, ফার্স্ট পে শিউরক্যাশ, ইউপে, ওকে ব্যাংকিং, রূপালী ব্যাংক শিউরক্যাশ, টেলিক্যাশ, ইসলামিক ওয়ালেট, স্পট ক্যাশ এবং মেঘনা ব্যাংক ট্যাপ এন পে নামে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছে। তবে বিকাশ, নগদ আর রকেটের ধারে কাছে নেই অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট পর্যন্ত দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪০৮টি। এই মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার ১৪১ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। লেনদেনের দিক থেকে ৬৫ শতাংশ বিকাশের দখলে। আর ১৯ শতাংশ রকেটের দখলে।

তবে নগদ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান নয় বলে কত শতাংশ লেনদেন এই কোম্পানির দখলে তা জানা যায়নি। তবে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিকাশের পরেই নগদের অবস্থান। এরপর রকেটের অবস্থান। বাকি অংশ অন্যান্য ব্যাংকের দখলে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স নেওয়ার পরও ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া বা শুরু না করারও তথ্যও পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ২০২০ সালে এক্সিম ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংক তাদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।

প্রতিযোগিতার ভয়ে লাইসেন্স নিয়েও সেবা দেয়া শুরু করেনি প্রিমিয়ার ও ইস্টার্ন ব্যাংক। আরও কয়েকটি ব্যাংক এমএফএস সেবা বন্ধ করবে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

প্রতিযোগিতামূলক বাজারে শীর্ষস্থান ধরে রাখা বিকাশ বলছে, শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা সহজে পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা তাদের ছিলো। ফলে ব্যাংকিং পরিসেবার বাইরে দেশের বৃহৎ যে জনগোষ্ঠী ছিলো তাদের আর্থিক সকল সেবা দিতেই বিকাশের যাত্রা শুরু। টাকা লেনদেন ছাড়াও পর্যায়ক্রমে নানা সেবা বিকাশে যুক্ত হয়েছে।

জানা গেছে, বিকাশ, রকেট এবং নগদের মাধ্যমে সহজে টাকা পাঠানো, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইন্টারনেট বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-বোনাস প্রদান, সরকারের সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন ভাতা, রেমিট্যান্স প্রেরণ, ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম প্রদানের সুবিধা রয়েছে। অন্যগুলোতে সেবার পরিধি কিছুটা কম। ফলে বিকাশ, রকেট আর নগদের গ্রাহক বেশি।

বিকাশের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা শামছুদ্দিন হায়দার ডালিম শেয়ারবাজারনিউজকে জানান, বিকাশের উদ্দেশ্য হলো প্রতিদিনকার লেনদেনে গ্রাহককে সক্ষম করে তোলা এবং লেনদেনে স্বাধীনতা দেয়া।

বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এক সময় বিকাশে শুধু টাকা লেনদেন করা যেত। এখন লেনদেনের পাশাপাশি বিল পে, কেনাকাটা, বেতন, অনুদান দেয়াসহ প্রায় সবকিছুই নিজের ইচ্ছা মতো করা যায়। একটি একাউন্ট ব্যবহার করে সকল সেবা পাওয়ায় আমাদের প্রতি গ্রাহকের আস্থা রয়েছে। ফলে জনসংখ্যার বড় একটি অংশ বিকাশ ব্যবহার করছে।

নগদের একজন কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে স্বল্প সময়ে আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। লেনদেন সহজ ও খরচ কম হওয়ায় প্রতিদিনই আমাদের গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৭৫০ কোটি টাকার লেনদেন করছে নগদ।

১ টি মতামত “মোবাইল ব্যাংকিং: লেনদেনের সিংহভাগ তিন কোম্পানির”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.