টাকা আত্মসাৎ তদন্তে দুদক’কে প্রগ্রেসিভ লাইফের অসহযোগিতা
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অসহযোগিতা করছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। টাকা আত্মসাৎ সম্পর্কিত রেকর্ডপত্র চাইলেও দুদক’কে তা দিচ্ছে না ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটি। এমনকি দু’বার তলবি নোটিশ পাঠানো হলেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তরা দুদকে হাজির হননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ ভুঁইয়া এর সাথে শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তৃতীয়বার গত ১৩ জুলাই অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে রেকর্ডপত্র চেয়ে নোটিশ দেন দুদকের উপ-সহকারি পরিচালক মো. নূর আলম। নোটিশ গ্রহণ করেন প্রতিষ্ঠানটির আইন কর্মকর্তা। সর্বশেষ নোটিশপ্রাপ্তির ৫ কর্মদিবসের মধ্যে রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে বলা হলেও গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত তা সরবরাহ করা হয়নি। যার কারণে অনুসন্ধানও বিলম্বিত হচ্ছে। যদিও দুদক আইনের ১৯(৩) ধারায় দুদককে সহযোগিতা প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ আইন লঙ্ঘনে ৩ বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে।
সূত্রটি আরও জানায়, অভিযোগ প্রমাণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষা প্রতিবেদন। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘হুদা ভাসি চৌধুরী কোম্পানি’ এই কোম্পানি’র নিরীক্ষা প্রতিবেদন করে। তাতে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভুয়া অনুমোদনহীন এজেন্টকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে কোটি কোটি টাকা প্রদানের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আত্মসাতের সঙ্গে এম.এ করিম, এনায়েত আলী খান ছাড়াও তৎকালীন সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক (সুজন বিমা বিভাগ) মো. মনিরুজ্জামান খান এবং সিনিয়র ব্যবস্থাপক (ইসলামী বীমা তাকাফুল বিভাগ) মো. রফিকুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট ১৯ কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা মেলে।
তারা পারস্পরিক যোগসাজশে ৭টি খাতে ২২ কোটি ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮৪৮ টাকার আত্মসাৎ করেন বলে ওই অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়। এছাড়া আবাসিক প্রকল্পে প্লট ক্রয়, চট্টগ্রাম ও সিলেটে জমি ক্রয়, গাড়ি কেনা, ইসলামী (তাকাফফুল) বীমার সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের তথ্য রয়েছে অডিট প্রতিবেদনে।
এ সব অভিযোগ আকারে আসলে তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এজন্য দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-সহকারি পরিচালক মো. নূর আলমকে বিষয়টি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয় কমিশন। সেই সঙ্গে উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়। এজন্য অভিযোগের ভিত্তিতে টাকা আত্মসাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদের তলব করা হয়েছিল কিন্তু তারা হাজির হননি। এছাড়া আত্মসাতের তথ্য সম্বলিত হুদা ভাসি চৌধুরী কোম্পানির নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মূল কপি, ভুয়া বিল-ভাউচারের টাকা এন্ট্রিকৃত রেজিস্ট্রার বই, ক্যাশ রেজিস্ট্রার ও প্রাপ্তি রেজিস্ট্রার বই, বিল ভাউচারে অর্থ প্রাপ্তির আবেদনপত্র, অর্থ ছাড়, অর্থ বুঝে নেয়া সংক্রান্ত মূল রেকর্ডপত্র কয়েক দফায় তলব করা হলেও তারা দেননি।
শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু