আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ অক্টোবর ২০১৫, বুধবার |

kidarkar

ব্যাংক এক্সপোজার লিমিট: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আগামীকাল বৈঠকে বসবে বিএসইসি

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ২০১৬ সালের ২১ জুলাই এর মধ্যে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ ইক্যুইটির ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার সময়সীমা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া উদ্যোগের অগ্রগতি জানতে চাইবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর জন্য আগামীকাল ২৯ অক্টোবর, ২০১৫ তারিখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের সমন্বয় সভায় ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে আলোচনা করবে বিএসইসি।

সমন্বয় সভায় বিএসইসি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ), যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্ম সমূহের নিয়ন্ত্রক, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি, সমবায় অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এ বিষয়ে বিএসইসি’র একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনার সময়সীমা ঘনিয়ে এসেছে। এ কারণে পুঁজিবাজারে সেল প্রেসার বেড়েছে। যা বর্তমানে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় বিরুপ প্রভাব ফেলছে। আর এ কারণে নানা উদ্যোগ নিলেও বাজারের পতন ঠেকাতে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট নির্ধারিত হওয়ায় ‍বিএসইসি এ বিষয়ে সরাসরি কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাই পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের সমন্বয় সভায় ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করেছে বিএসইসি।

এ কর্মকর্তারা আরও জানান, বাজারকে স্থিতিশীল করতে ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটের সময়সীমা বাড়াতে হবে। এর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া উদ্যোগের অগ্রগতি কি তা সমন্বয় সভায় জানতে চাইবে বিএসইসি।

ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া এক্সপোজার লিমিট নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে সিঙ্গেল এক্সপোজার ইক্যুইটির ২৫ শতাংশ ও কনস্যুলেটেড এক্সপোজার ইক্যুইটির ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে; যা আগামী বছরের ২১ জুলাইয়ের পরে আইনে বাস্তবায়ন হবে। আবার কিছু জায়গায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনেই বলা আছে যে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু জিনিস এক্সপোজারে আসবে না। এখানে অনেক সমস্যা রয়েছে। এ নিয়ে আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে বসার জন্য চেষ্টা করেছি।

তিনি আরো বলেন, মার্কেটের মূল সমস্যার একটা বড় সমস্যা বলা হয় ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি বা যারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারীর মধ্যে পড়ে। এখানে ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটে একটি বড়ো বাধা আসে। যা পুঁজিবাজারে এক নম্বর সমস্যা। যদি বাজারে কোনো সিকিউরিটিজের দাম বেড়ে যায় তবে এদের এক্সপোজার বেড়ে যায়। কারণ এটা মার্ক টু মার্ক অ্যাকাউন্টিং ফলো করা হয়। আবার ট্রেড না করলেও দর বাড়ার কারণে এক্সপোজার বাড়ে। এর দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত।

এদিকে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ইক্যুইটির ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। ব্যাংকের ইক্যুইটি বলতে আদায়কৃত মূলধন,শেয়ার প্রিমিয়ামে রক্ষিত স্থিতি,সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিকে বুঝানো হয়। গত ৩১ মে পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইক্যুইটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার কোটি টাকা। যার ২৫ শতাংশ হচ্ছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে না। কিন্তু ইতিমধ্যেই ব্যাংকগুলো প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। অর্থাৎ আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলো প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বেশি বিনিয়োগ করেছে। তাই এ বিনিয়োগ কমিয়ে আনার জন্য ২০১৬ সালের ২১ জুলাই ডেডলাইন বেঁধে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আগামী ১ বছরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে বের করে নিতে হবে। এতে বাজারে ব্যাপক সেল প্রেসার তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.