আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ মে ২০১৬, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

আশ্বাসে সক্রিয় হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ: উর্ধ্বমূখী সূচক

bazar 2

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সহায়তা স্পষ্ট হওয়ায় পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ সক্রিয় হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এতে পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ছে। তবে বাজারকে স্থিতিশীল করতে হলে বিনিয়োগকারীদের স্বল্প সময়ে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলেও মত দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, সূচকের টানা পতন রোধ করার জন্য বিএসইসি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন নীতি সহায়তা দিচ্ছে। আর এসব সহায়তার ফলে সূচক বাড়ছে। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বল্প সময়ে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা রয়েছে। পরিণতিতে সূচক বাড়লে বাজারে সেল প্রেশার তৈরি হচ্ছে। তাই সূচকের উর্ধ্বগতি ধরে রাখা যাচ্ছে না। এতে বাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে।

এদিকে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ড. আবু আহমেদ বলেন, প্রথম প্রথম বাজার পড়তিকে অনেকে বলত, বাজার শুদ্ধ হচ্ছে। আর এখন সেই ব্যাখ্যাও অচল। এখন যখন শেয়ারবাজারের মূল্যসূচক বৃদ্ধির পেছনে সব যুক্তি কাজ করার কথা, তখনো বাজার পড়ছে কেন? এই কেন-এর উত্তরটা গভীরভাবে নীতিনির্ধারকরা খুঁজতে চায়নি। তারা বাজার পড়লে আফসোস করে, কিন্তু ভাসা ভাসা জ্ঞানের ভিত্তিতে কারণ খুঁজতে চেষ্টা করে।

তিনি আরও বলেন, গত তিন বছরে আইপিও, বোনাস শেয়ার বিক্রয় এবং মার্জারপূর্বক অতিরিক্ত শেয়ার ইস্যু করে উদ্যোক্তা কর্তৃক সেই শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে বাজার থেকে কী পরিমাণ অর্থ বের হয়ে গেছে, তার কি হিসাব কারো কাছে আছে? ব্যাংকিং সেক্টরের বোনাস শেয়ার ইস্যু করার একটা যুক্তি আছে বটে। কারণ ব্যাসেল-২ ও ব্যাসেল-৩-এর শর্তাবলি মানতে হলে ব্যাংকগুলোকে টায়ার ওয়ান ক্যাপিটাল বাড়াতে হবে। কিন্তু বাজারে নতুন আসা টেক্সটাইল কোম্পানিগুলোকে কেন এত বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে হবে? এসব কোম্পানির কি ব্যবসা এতই বেড়ে যাচ্ছে যে, তাদের ইক্যুইটি ক্যাপিটালকে আইপিও ইস্যুর মাধ্যমে এক বছরের মধ্যে বাড়াতে হবে। আসল উদ্দেশ্য অন্যটা। সেটা হলো, উদ্যোক্তা কর্তৃক বোনাস হিসেবে প্রাপ্ত শেয়ারগুলোকে বিক্রয় করা। গত তিন বছরে উদ্যোক্তারা কত শ কোটি টাকার বোনাস শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে অর্থ বাইরে নিয়ে গেছে, তার কি কোনো হিসাব কর্তৃপক্ষের কাছে আছে? তাহলে কর্তৃপক্ষ কি একটা ভুল করছে না অবাধে বোনাস শেয়ার ইস্যু করার অনুমতি দিয়ে এবং সেই শেয়ারকে আবার বাজারে বিক্রি করতে দিয়ে? কর্তৃপক্ষের নির্লিপ্ততার সুযোগ কিছু চালাক উদ্যোক্তা ঠিকই গ্রহণ করে চলেছে। একবার তারা উচ্চমূল্যে আইপিও ছেড়েছে, এর পর বোনাস শেয়ারের নামে লাখ লাখ কাগুজে শেয়ার সৃষ্টি করে সেগুলোকে বাজারে বিক্রি করে শুধু তারাই ধনী হয়েছে। ধনী হওয়ার এই সহজ পথ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরকে প্রতারণার এই কথিত অনুমোদিত পথ যত দিন বিএসইসি বন্ধ না করবে, তত দিনই শেয়ারবাজারের এ অবস্থা চলতে থাকবে। কারণ হলো, এই পথে অনেক বেশি অর্থ বাজার থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় শেষ হয় লেনদেন। এদিন শুরু থেকে উত্থান লক্ষ করা যায়। বৃহস্পতিবার সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৩০৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১০৫৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৬৬৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩১৬ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৬টির, কমেছে ১০৩ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭ টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৪৭৮ কোটি ১২ লাখ ৪১ হাজার টাকা।

এর আগে বুধবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৪২৫৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১০৪২ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১৬৪১ পয়েন্টে। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ৪০০ কোটি ৭৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।

এদিকে দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ সূচক ৮৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৮০৫৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৪০টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৭টির, কমেছে ৭৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির। আজ সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.