বাজেটের চাপে পুঁজিবাজার: সূচক ও লেনদেনে খরা
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেট গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাব ঘোষণা হয়। পুঁজিবাজারে অবকাঠামোগত বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে স্টক এক্সচেঞ্জের উত্থাপিত দাবিগুলোর কোনটাই প্রস্তাবিত বাজেটে আসেনি। এবং বিনিয়োগকারীদের আশা থাকা সত্তেও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাজেটে সু-নির্দিষ্ট কোন দিগনির্দেশনা আসেনি। পরিনতিতে আজকের বাজারে সূচক ও লেনদেন ব্যাপক অবনতি হয়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার নিয়ে শুধু আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন। কিন্তু চলমান মন্দা বাজারের উন্নয়নে সু-নির্দিষ্ট কোন দিগনির্দেশনা দেননি বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে পুঁজিবাজারের জন্য ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেটা শুধু মাত্র তালিকাভুক্ত রাষ্টায়াত্ব কোম্পানিগুলোর জন্য। আর এই টাকা সরাসরি পুঁজিবাজারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা হবে না। তবে কিভাবে বিনিয়োগ করা হবে সেই বিষয়ে কোন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
পুঁজিবাজারে অবকাঠামোগত বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে ডিএসইর দাবী গুলো ছিলো: ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পরবর্তী স্টক এক্সচেঞ্জকে ৫ বছরর জন্য কর অব্যাহতির সুবিধা প্রদান, স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেকহোল্ডারদের নিকট হতে উৎসে কর সংগ্রহের হার হ্রাস করা, করমুক্ত লভ্যাংশের পরিমাণ ২৫ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ লাখ টাকা করা, ডিমিউচ্যুয়ালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার এবং আয়বর্ষের সংজ্ঞা পরিবর্তন করা। কিন্তু এর কোনোটিই বাজেট প্রস্তাবনায় আসেনি।
এ প্রসঙ্গে ডিএসই’র চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, আমরা বাজেট প্রস্তাবনায় পাঁচটি ইস্যুর বাস্তবায়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু এর কোনোটিই বাজেট প্রস্তাবনায় আসেনি। কিন্তু এতে ডিএসই হতাশ নয়। বরং এটি প্রস্তাবিত বাজেট। মূল বাজেটে আমাদের দাবী অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় শেষ হয় লেনদেন। এদিন শুরু থেকেই বাজারে সূচকের পতন লক্ষ করা যায়। রোববার সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩৭.৬২ শতাংশ। আজ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩০৭ কোটি টাকা।
রোববার দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪৪২৫ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১০৮৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭৪৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩১৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭১টির, কমেছে ১৯০ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৩ টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৩০৭ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এর আগে বৃহস্পতিবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ২৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৪৪৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১০৯৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৭৬১ পয়েন্টে। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৯৩ কোটি ৫২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৮৫ কোটি ৬৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকা বা ৩৭.৬২ শতাংশ।
দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ সূচক ৪২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮২৮৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২২৪টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫টির, কমেছে ১৪০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। আজ সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু