ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ে ব্যাখ্যা দিলো আইডিআরএ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: জীবন বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ে বিভ্রান্তি রোধে এক ব্যাখ্যা দিয়েছে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বীমা শিল্পের সার্বিক উন্নয়নে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এই ব্যাখ্যা দেয় খাতটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। উক্ত ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ব্যবস্থাপনা ব্যয়কে আত্মসাৎ হিসেবে গন্য করা হয়নি।
জীবন বীমার জন্য দেয়া আইডিআরএ’র ব্যাখ্যাটি হল: সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় সম্পর্কে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। যার ফলে বীমা গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও শংকা সৃষ্টির অবকাশ রয়েছে এবং এরুপ সংবাদে বীমা শিল্পের প্রসারে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এরুপ অবস্থায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেব বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ থেকে বীমা শিল্পের প্রসারের স্বার্থে ও গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও শংকা দূরীভুত করার জন্য লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় সম্পর্কে প্রকৃত অবস্থা উপস্থাপন করা আবশ্যক।
১৯৫৮ ইং সালের বীমা বিধির ৩৯ বিধিতে বীমাকারী অর্থাৎ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহের ব্যবস্থঅপনা ব্যয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করা আছে। উক্ত বিধির বিধান লংঘিত হলে অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সুনির্দিষ্ট সীমার অতিরিক্ত হলে ২০১০ ইং সালের বীমা আইন ৬২ ধারার ক্ষমতাবলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এরুপ বীমা কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে এবং আইনে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহের ব্যবস্থাপনা ব্যয়কে আত্মসাৎ হিসেবে গন্য করা হয়নি। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইতিমধ্যে বীমা আইনের উক্ত বিধান মতে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহ এর অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে এনে বিধিগত সীমার মধ্যে আনার জন্য প্রতিকারমূলক প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্থ অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ত পদক্ষেপ গ্রহণ সহ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাগ্রহণের পাশাপাশি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গহণ করেছে। প্রথমত: বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ থেকে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহকে ব্যবস্থাপনা ব্যয় নির্ধারিত সীমার মধ্যে নিয়ে আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহকে আরও কতিপয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
১. অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় সর্বোচ্চ ৫ বছরের মধ্যে কমিয়ে পুন:ভরণ করতে হবে।
২. কোম্পানিসমূহের বোর্ড সভার সিদ্ধান্তসহ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় পুন:ভরণের অঙ্গিকারনামা নেয়া হয়েছে।
৩. কোম্পানির পরিচালকগণকে কোম্পানির তহবিলে অতিরিক্ত ব্যয়িত ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমিয়ে আনতে ব্যাক্তিগত উদ্যোগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগহণ।
৪. কর্তৃপক্ষ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমানো সহ সকল কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে থাকে এবং সময়ে সময়ে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদকে সভায় আহ্বান করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকে।
২০১১ সালে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠনের পর থেকেই উপরোক্ত পদক্ষেপসমূহ নেয়া হয়েছে। যার ফলে পূর্বে যে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ছিল তা বর্তমানে বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে গ্রহকদের পাওনা বোনাসও পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাবে এবং কিছু কিছু কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় নির্ধারিত সীমার মধ্যেই রাখা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় কোম্পানিসমূহের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাব ব্যয় বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। কোম্পানিসমূহের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও হ্রাস পাবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করে। এজন্য কর্তৃপক্ষ কোম্পানিসমূহের জনবলকে প্রশিক্ষিত করা ও কোম্পানির দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে আসছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে প্রকৃত তথ্য যথাযথভাবে উপস্থিত না হওয়ায় বীমা গ্রাহকক ও বীমা শিল্পে বিভ্রান্তির সোযোগ রয়েছে। বীমাগ্রাহক ও বীমা শিল্পের সংশ্লিষ্ট সকলের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, বীমা কোম্পানিসমূহের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় পর্যায়ক্রমে হ্রাস করে গ্রহকদের স্বার্থ নিশ্চিৎ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে সংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। কর্তৃপক্ষ সর্বদা বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এর নিশ্চয়তা প্রদান করছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু