১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা গচ্চা যাবে পুঁজিবাজার থেকে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পরিচালন অদক্ষতার কারণে খেলাপী হওয়া ঋণের প্রায় ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা গচ্চা দিতে যাচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রয়াত্ব রুপালী ব্যাংক এবং বেসরকারী খাতে পরিচালিত প্রিমিয়ার ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকে চলতি বছরে সঞ্চিতি (প্রভিশনিং) ঘাটতির পরিমান দাঁড়িয়েছে মোট ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা, যা ব্যাংক কোম্পানিগুলোকে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে সংরক্ষন করতে হবে। ফলে কোম্পানির করা মুনাফার টাকা পুঁজিবাজারে না এসে ঢুকে যাবে ঋণ খেলাপীদের পকেটে।
কেন্দ্রিয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রয়াত্ব সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমানে রুপালী ব্যাংকে রয়েছে ৭৭৫.৭৬ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৮০.০৬ কোটি ও ন্যাশনাল ব্যাংকের ৮৯.২১ কোটি টাকা। বিগত বছরগুলোতেও কোম্পানিগুলোর প্রভিশনিং ঘাটতি ছিল। ফলে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের নির্দেশনার অধীনে কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। এ কারণে গত পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে শুধুমাত্র ন্যাশনাল ব্যাংক একবার ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। এর বাইরে তিনটি ব্যাংক ক্রমাগত স্টক ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। আর এ সুযোগে বিনিয়োগকারীদের টাকা পুঁজিবাজার থেকে ঋণ খেলাপীদের পকেটে ঢুকছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দেওয়া কেন্দ্রিয় ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষ। এর পাশাপাশি কোনো ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতি থাকলে ব্যাংকগুলো ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না। অনুমোদন সাপেক্ষে স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়া যাবে। নিয়মিত প্রভিশনিং ঘাটতিতেই ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করায় তাই ব্যাংকগুলো গত পাঁচ বছর থেকে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না। বিনিয়োগকারীদের মুনাফার অংশের এ অর্থ চলে যাচ্ছে অনিয়মে ঋণ নেওয়া ঋণ খেলাপীদের পকেটে।
উল্লেখ্য, রুপালী ব্যাংকের চলতি বছরের সঞ্চিতি সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ১ হাজার ৭৮৮.২৬ কোটি টাকা। কিন্তু এর বিপরীতে কোম্পানি প্রভিশনিং করেছে ১ হাজার ১২.৭০ কোটি টাকা। ব্যাংকটির মোট বিতরন করা ঋণের ১৫.৩১ শতাংশই খেলাপীদের পকেটে চলে গেছে। ন্যাশনাল ব্যাংকের দেওয়া মোট ঋণের ৮.৩৪ শতাংশ ঋণই খেলাপীতে পরিনত হয়েছে। চলতি অর্থবছরে কোম্পানির মোট ৮৭৩.৬৩ কোটি টাকা সঞ্চিতি সংরক্ষণের বাধ্য-বাধকতা থাকলেও, সংরক্ষণ করা হয়েছে ৭৭৪.৫২ কোটি টাকা। অন্যদিকে, প্রিমিয়ার ব্যাংকের সঞ্চিতি সংরক্ষণের বাধ্য-বাধকতা ছিল ৩৬৫.২১ কোটি টাকা। অথচ কোম্পানির সংরক্ষিত সঞ্চিতির পরিমান মাত্র ১৮৫.১৫ কোটি টাকা। ব্যাংকের মোট ঋণের ৪.৯২ শতাংশই খেলাপীদের পকেটে চলে গেছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/ওহ