আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬, শুক্রবার |

kidarkar

বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য দিতে প্রয়োজন লিকুইডেশন প্রক্রিয়া

 

liquidশেয়ারবাজার রিপোর্ট: বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য নিশ্চিত করতে লিকুইডেশন প্রক্রিয়া চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। যেসব কোম্পানি দিনের পর দিন রুগ্ন অবস্থায় ওটিসি মার্কেটে রয়েছে তাদের একটা সন্তোষজনক সমাধানে এ প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ প্রক্রিয়ায় যেসব কোম্পানি আর উৎপাদনে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই তাদের কোম্পানির অ্যাসেট বিক্রি করে শেয়ারহোল্ডারদের যথাসম্ভব প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়া দরকার বলে মনে করেন তারা।

সূত্র মতে, ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে বেশকিছু রুগ্ন ও অস্তিত্বহীন কোম্পানি রয়েছে। এগুলোর ক্ষেত্রে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ইতিমধ্যে উদ্যেগ গ্রহণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ বিষয়ে কী করণীয়, সে বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছে সংস্থাটি। এদিকে যেসব কোম্পানি রুগ্ন অবস্থায় রয়েছে এগুলোর যাবতীয় সম্পত্তি বিক্রি করে কোম্পানির অবলুপ্তি ঘটানোর জন্য লিকুইডেটরের প্রয়োজন পড়ে বলে জানা গেছে।

ইতিমধ্যে ওটিসি মার্কেটের পদ্মা সিমেন্ট কোম্পানিকে লিক্যুইডেশন প্রক্রিয়ায় আনা হয়েছে।

এদিকে ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ২৫৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানির অবলুপ্তির কার্যধারা পরিচালনা এবং আদালত কর্তৃক আরোপিত তদসংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্য আদালত সরকারি রিসিভার ব্যতীত এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে পারবে যা দিগকে সরকারী লিকুইডেটর বলা হবে। আবার ২৬২ এর (খ) ও (গ) ধারার লিকুইডেটরের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোম্পানির জন্য যা কল্যাণকর হয় এইরূপ উহার অবলুপ্তির স্বার্থে যতদূর প্রয়োজন উক্ত কোম্পানির ব্যবসা পরিচালনা করা এবং কোন ব্যক্তি,সংস্থা বা অন্য কোম্পানির নিকট সামগ্রিকভাবে হস্তান্তর বা খন্ড খন্ডভাবে বিক্রয় করার ক্ষমতাসহ কোম্পানির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি প্রকাশ্য নিলাম কিংবা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে বিক্রয় করা।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ বাকী খলীলী শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, বিদ্যমান আইনে ‘লিকুইডেশন’ প্রক্রিয়া যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ হবে। এটি দুই’ভাবে হতে পারে। প্রথমত. কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোর্টে বলবে যে তারা দেউলিয়া, দ্বিতীয়ত. আদালত যদি সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে দেউলিয়া ঘোষণা করে। কিন্তু আমাদের দেশের আইনি প্রক্রিয়াগুলো বেশ দীর্ঘ মেয়াদি হয়। কর্তৃপক্ষ আসলে কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি ভাবছে সেটাই হচ্ছে মুখ্য। তারা যদি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে, তবে শিগগিরই সরকার এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ সবার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে একটি আইন তৈরি করতে হবে।

একই প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী শেয়ারবাজারনিউজ ডট কমকে বলেন,  শিগগিরই সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রয়োজন। ওটিসি মার্কেটের জটিলতা এবং বিনিয়োগকারীদের নানা ভোগান্তি নিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। এ সমস্যা সমাধানের জন্য একটি সময়োপযোগী আইন তৈরি করা প্রয়োজন। এজন্য প্রথম কাজ হচ্ছে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি আইন তৈরি করা।  বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের আইন রয়েছে বলে জানান তিনি।

ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা জানান, ‘লিকুইডেশন’ প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকৃত টাকা যথাসম্ভব তাদের কাছে ফিরে আসবে, যা তাদের হতাশাকে অনেকখানিই দূর করবে। কেননা ওটিসি মার্কেটের কবলে পড়লে বিনিয়োগকারীরা হতাশায় নিমজ্জিত হয়। তাদের বিনিয়োগ পড়ে ঝুঁকির মুখে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত বাজার কার্যকরী করার জন্য এ ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যা পুঁজিবাজারকে স্বচ্ছ করবে বলে মনে করেন তারা।

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.