বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে সিএমসি কামাল ও বিডি ওয়েল্ডিং
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: লিস্টিং রেগুলেশন, ২০১৫ অমান্য করে কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বোর্ড মিটিং সম্পন্ন করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২ কোম্পানি। এগুলো হলো: বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিএমসি কামাল টেক্সটাইল মিলস এবং জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডস লিমিটেড।
স্টক এক্সচেঞ্জের আইনের কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই এক প্রকার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে সিএমসি কামাল ও বিডি ওয়েল্ডিং।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই (জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৬) পর্যন্ত সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন সংক্রান্ত বোর্ড সভা সম্পন্ন করেছে কোম্পানি দুটি। অথচ লিস্টিং রেগুলেশন, ২০১৫ এর ধারা ১৯ এর উপ-ধারা ১ অনুযায়ী, কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করণ সংক্রান্ত বোর্ড সভার জন্য নির্ধারিত তারিখ সাত দিন পূর্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে জানাতে হবে। কিন্তু গতকাল ২১ নভেম্বর কোম্পানি দুটি প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করণ সংক্রান্ত বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অথচ এ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ নির্ধারণ সংক্রান্ত কোন ঘোষণা ডিএসই’র ওয়েবসাইটে আসেনি।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোম্পানিগুলোর প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের তুলনায় ভাল অবস্থানে থাকায় তাদের ইপিএস সংক্রান্ত বিষয় নিজেরাই বাজারে ছড়িয়ে শেয়ার দর বাড়াচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে স্টক এক্সেচেঞ্জের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। তাদের স্বল্প স্বার্থের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে ডিএসই’র এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, সিএমসি কামাল ও বিডি ওয়েল্ডিংয়ের প্রথম প্রান্তিক বোর্ড সভার তারিখ নির্ধারণ সংক্রান্ত কোন তথ্য ডিএসই’র কাছে আসেনি। তাই ডিএসই’র ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে কোন তথ্য প্রকাশ করা যায়নি।
এ বিষয়ে কোম্পানি দু’টির সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।
সিএমসি কামাল:
চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে সিএমসি কামালের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৪৪ টাকা, শেয়ার প্রতি কার্যকরী নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ০.২৪ টাকা (নেগেটিভ) এবং শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৯.৭৮ টাকা। যা এর আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ০.২৯ টাকা, এনওসিএফপিএস ছিল ০.২০ টাকা এবং ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত এনএভিপিএস ছিল ১৯.৩৪ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ০.১৫ টাকা বা ৫১.৭২ শতাংশ।
বোর্ড সভার অনুষ্ঠিত হওয়ার আগের চার কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১২.৭৮ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ ১৩.৩০ টাকা থেকে ১৫.০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
২২ নভেম্বর, কোম্পানিটির ঘোষণা ডিএসইর ওয়েবসাইডে আসার পর শেয়ার দবে প্রভাব পরতে থাকে। এইদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৪০ টাকা বা ৯.৪৬ শতাংশ বেড়েছে। সারাদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৫.২০ টাকা থেকে ১৬.২০ টাকায় উঠানামা করে এবং সর্বশেষ লেনদেন হয় ১৬.২০ টাকায়। সারাদিন কোম্পানিটির ৯৯ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮টি শেয়ার ২ হাজার ৭৭৬ বার হাতবদল হয়। যার বাজার মূল্য ১৫ কোটি ৮৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। শেয়ারটিতে লেনদেন হওয়া সর্বশেষ দর ১৬.২০ টাকা।
বিডি ওয়েল্ডিং:
প্রথম প্রান্তিকে বিডি ওয়েল্ডিংয়ের শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ০.২৯ টাকা, শেয়ার প্রতি কার্যকরী নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ০.২৭ টাকা (নেগেটিভ) এবং শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) হয়েছে ১২.৫৯ টাকা। যা এর আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ০.৩০ টাকা, এনওসিএফপিএস ছিল ০.২৭ টাকা (নেগেটিভ) এবং ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত এনএভিপিএস ছিল ১২.৮৭ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির লোকসান কমেছে ০.০১ টাকা।
বোর্ড সভার অনুষ্ঠিত হওয়ারর দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ০.২০ টাকা। অর্থাৎ ৮.৮০ টাকা থেকে ৯.০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এ কোম্পানিটির ঘোষণা ডিএসইর ওয়েবসাইডে আসার পর শেয়ার দবে প্রভাব পরতে থাকে। এইদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯.০০ টাকা থেকে ৯.১০ টাকায় উঠানামা করে এবং সর্বশেষ লেনদেন হয় ৯.০০ টাকায়। সারাদিন কোম্পানিটির ৬২ হাজার ৯৩৩টি শেয়ার ৩৫ বার হাতবদল হয়। যার বাজার মূল্য ৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু