চোরাবালি থেকে বাঁচার উপায় জেনে নিন (ভিডিও)
শেয়ারবাজার ডেস্ক: চোরাবালি বলতে আমরা সাধারণভাবে বুঝি- যখন বালি, কাদা বা নুড়ি ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহের সান্নিধ্যে আসে, সেই বালি বা নুড়ির দানাগুলোর মধ্যে যে ঘর্ষণ শক্তি থাকে তা কমে যায়, আর সেই বালি বা মাটি ভার সহ্য করতে পারে না- একেই চোরাবালি বলে।পানি শুধু মাটির উপরেই না মাটির নিচেও থাকে।
প্রাকৃতিকভাবে ভূগর্ভে পানি থাকার ঘটনা ঘটে দুইভাবে।
১. ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহ
২. ভূমিকম্প।
আটকে পড়া পানি তার চারপাশের মাটিকে সিক্ত করে। এভাবে তরলীকরণ হতে হতে এক পর্যায়ে বালির অণুগুলোর মধ্যে যে ঘর্ষণ থাকে তা কমে যায় এবং বালি পানির অণুর মতো আচরণ করে। ভেজা এই বালি এক পর্যায়ে এমন অবস্থায় যায় যে সে কোনো ভারি বস্তুর চাপ নিতে পারে না। নিখাদ তরলে কিছু পড়লে সাথে সাথে ডুবে যায়। আর তাই চোরাবালিতে কিছু পড়লে তা ধীরে ধীরে ডুবে। মূলত এটাই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
চোরাবালিতে একজন মানুষ ডুবে যাওয়ার কারণ: চোরাবালি পানি ও তরল কাদা মিশ্রিত এমনই একটি গর্ত, এর ফাঁদে একবার পা দিলে আর নিস্তার নেই। আস্তে আস্তে ডুবে যেতে হয় বালির ভেতর। যত নড়া যায় ততই ডুবে যেতে থাকে শরীর।
চোরাবালিতে পড়ার পর সেখান থেকে উঠে আসার জন্য চেষ্টা করলে শরীরের চাপে আরও দ্রুত ডুবে যেতে হয়। সময়মতো কেউ এগিয়ে না এলে ওই মানুষ নিশ্চিত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তবে অধিকাংশ চোরাবালি সাধারণত মারাত্মক নয়। এটি প্রকৃতির একটি অদ্ভুত বিস্ময়।
চোরাবালি থেকে বাঁচার উপায় : চোরাবালিতে আটকে গেলে একদমই অধৈর্য হওয়া যাবে না। অধৈর্য হয়ে হাত-পা ছোড়াছুড়ি করলে আরও বেশি আটকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সবার মনে রাখা উচিত, চোরাবালি কিন্তু পানির চেয়ে অনেক বেশি ঘন। তাই চোরাবালিতে ভেসে থাকা পানির চেয়ে অনেক বেশি সহজ। যদি সঙ্গে কোনো ভারি বস্তু থাকে তাহলে তা ছেড়ে ফেলতে হবে। কারণ ভারি বস্তু আরও বেশি দ্রুত নিচে টেনে নিতে পারে।
মানুষের শরীরের ঘনত্ব প্রতি ঘন ফুটে ৬২ দশমিক ৪ পাউন্ড। অর্থাৎ মানুষ যদি পানিতে ভেসে থাকতে পারে, তাহলে চোরাবালিতেও অনায়াসে পারবে, যেহেতু চোরাবালির ঘনত্ব পানির থেকে বেশি। তাই চোরাবালিতে পড়ে গেলে একদম নড়াচড়া করা যাবে না। যত নড়াচড়া হবে তত ডুবে যাবার আশঙ্কা বাড়বে।
চোরাবালি শুধু সমুদ্র সৈকতেই থাকে না। নদীর পাড়ে, হাওর এর আশে পাশেও থাকতে পারে। বেশিরভাগ চোরাবালির গভীরতা কম হয়। খানিকটা ডোবার পর হয়তো পা তলায় আটকে যেতে পারে। যদি তা না হয়, মানে যদি চোরাবালি খুব গভীর হয় তাহলে পুরোপুরি ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
সেক্ষেত্রে পানিতে আমরা যেভাবে সাঁতার কাটি, ঠিক সেভাবে নিজের শরীরকে যতটা সম্ভব অনুভূমিক করে ফেলতে হবে। তারপর খুব ধীরে ধীরে সাঁতরে চোরাবালির বাইরে আসার চেষ্টা করতে হবে। সাথে যদি অন্য কোনো ব্যক্তি থাকে তাহলে তাকে বলতে হবে নিরাপদ দূরত্ব থেকে রশি ফেলতে এবং এই রশি ধরে ধীরে ধীরে চোরাবালি থেকে উঠে আসা যাবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু