২০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২০ শতাংশ অর্থাৎ ৫৮টি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে পিই রেশিও ৪০ এর উপরে রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ৩৩টি। অপরদিকে পিই রেশিও নেগেটিভে রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ২৫টি।
তাই এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকা অথবা বুঝে শুনে বিনিয়োগ করার জন্য সাধারণ এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, বর্তমান শেয়ার দরকে ইপিএস দিয়ে ভাগ করলে পিই রেশিও পাওয়া যায়। আর শেয়ার দর এবং ইপিএস এর মধ্যে ব্যবধান বেশি হলে পিই রেশিও বাড়বে। এই পিই রেশিও ৪০ এর উপর অবস্থান করলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে। তাছাড়া, পিই রেশিও ৪০ এর উপর থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের মার্জিণ সুবিধা না দেয়ার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলোর প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনাও রয়েছে। নির্দেশনাতে আরো বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ পিই সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতে মার্জিণ সুবিধা দেয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
জানা যায়, ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ঝুঁকিপূর্ণ পিই রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ২১টি। এ কোম্পানিগুলো হলো: এসিআই (পিই-৫৬.৫২), এসিআই ফর্মুলেশন (পিই-৪৩.৪৪), আল-হাজ্জ্ব টেক্সটাইল (পিই-৮৯.১৮), এমবি ফার্মা (পিই-৬৩.৩১), এটলাস বাংলাদেশ (পিই-২৯৯৭.৫), বঙ্গজ (পিই-৬৫.৬৫), বিডি-ল্যাম্পস (পিই-৫০.৭৮), বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল (পিই-১৫৩.৮২), দেশ গার্মেন্টস (পিই-৪০.০০), ইস্টার্ণ লুব্রিকেন্ট (পিই-১১৫), ইস্টার্ন ক্যাবলস (পিই-৭৫.৩৩), জিকিউ বলপেন (পিই-৪০.০৮), জেএমআই সিরিঞ্জ (পিই-৫১.৮১), লিব্রা ইনফিউশন (পিই-১০৪.৭৬), মুন্নু স্টাফলার (পিই-২৩৪.৫৫), নর্দার্ণ জুট (পিই-২২৫), রেনউইক যজ্ঞেশ্বর (পিই-৫৫.২১), সামিট এলায়েন্স পোর্ট (পিই-৬৭.২), সোনালী আঁশ (পিই-১৫৫.৬৩), স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস (পিই-৬৫.৭৭) এবং ন্যাশনাল পলিমার (পিই-৪৫.২৭)।
অপরদিকে, ‘এ’ ক্যাটাগরিতে বর্তমানে লোকসানে রয়েছে অর্থাৎ পিই নেগেটিভে রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ৬টি। এগুলো হলো: বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ইনটেক অনলাইন লিমিটেড, ন্যাশনাল টি, ন্যাশনাল টিউবস, পাওয়ারগ্রীড বাংলাদেশ এবং উসমানিয়া গ্লাস।
এদিকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ঝুঁকিপূর্ণ পিই রেশিও রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ৬টি। এ কোম্পানিগুলো হলো: আনোয়ার গ্যালভানাইজিং (পিই-৫৭.৩৪), সিভিও পেট্রোক্যামিকেল (পিই-৪৩.৭৩), হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপার্স (পিই-৫০.৯৫), লিগ্যাসি ফুটওয়্যার (পিই-৭২.৫), মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ (পিই-৪৩) এবং মুন্নু সিরামিকস (পিই-১২৮.৫)। জেমিনি সী ফুড নেগেটিভ পিই-তে রয়েছে।
অন্যদিকে, ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে ঝুঁকিপূর্ণ পিই রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ছয়টি। এগুলো হলো: বিডি অটোকার্ড (পিই-১২৫.৭১), বিকন ফার্মা (পিই-২৩৫), বেক্সিমকো সিনথেটিক (পিই-১২০), ইনফর্মেশন সার্ভিস লি: (পিই-৯০), লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট (পিই-৪৪.৪৯) এবং প্রিমিয়ার লিজিং (পিই-৯২.৫)।
একই ক্যাটাগরিতে নেগেটিভ পিই রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ১৮টি। এগুলো হলো: আজিজ পাইপস, দুলামিয়া কটন, ফাইন ফুডস, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, ইমাম বাটন, জুট স্পিনিং, কে অ্যান্ড কিউ, মেঘনা কনডেস্ক মিল্ক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মাইডাস ফাইন্যান্স, মডার্ণ ডাইং, রহিমা ফুড, সমতা লেদার, সাভার রি-ফ্যাকটরিজ, শ্যামপুর সুগার, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, তাল্লু স্পিনিং এবং ঝিলবাংলা সুগার।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ শেয়ারবাজার নিউজ ডট কমকে বলেন, সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে হলে কোম্পানির পিই রেশিও দেখে বিনিয়োগ করা উচিত। এতে বিনিয়োগে ঝুঁকি কমবে। তাছাড়া এ বাজারে এমন অনেক কোম্পানি আছে যাদের আয়ের সাথে শেয়ারদরের সামঞ্জস্যতা নেই। অর্থাৎ মুনাফা কম কিন্তু শেয়ার দর বেশি। এসব কোম্পানি বাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। তাই বিএসইসিকে এ বিষয়ে আরও সক্রিয়া ভূমিকা পালন করতে হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/তু/অ