শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে এসেছে- মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের অর্থনীতি নিঃসন্দেহে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে দুর্ভাগ্যবশত এ ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের ভূমিকা কম। আর শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে এসেছে। গতকাল সোমবার (২২ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আইডিএলসি ব্যালেন্স ফান্ডের রোড শো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মুসা বলেন, ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসে বলে মনে হয় না। শেয়ারবাজারকে শক্ত করতে ভালো কোম্পানি আনতে হবে। একইসঙ্গে ভালো মিউচ্যুয়াল ফান্ড আনতে হবে। আর প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারন বিনিয়োগকারীদেরকে ট্রেডিং কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া নগদ লভ্যাংশের উপর কর হার কমাতে হবে। বর্তমানে মার্জিন ঋণের হিসাবে নেগেটিভ ইক্যুইটিকে শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় সমস্যা। তার পরেও এদিকে সরকার বা সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো নজর নেই বলে জানান ড. মোহাম্মদ মুসা।
আইডিএলসি ফাইন্যান্সের সিইও এবং এমডি আরিফ খান বলেন, দেশের অর্থনীতির তুলনায় শেয়ারবাজার খুবই ছোট। এর মধ্যে আবার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের অংশগ্রহণ খুবই কম। তবে এক সময় দেশের শেয়ারবাজার ও অর্থনীতিতে মিউচুয়াল ফান্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরিফ খান বলেন, বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে আইডিএলসি নিয়ে এসেছে মিউচুয়াল ফান্ড। যা দক্ষতার সাথে পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া আইডিএলসিতে বিদ্যমান ট্রান্সপারেন্সির কালচার ফান্ডটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীরা নিজেরাই বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। যাতে বিনিয়োগের আগে একটি কোম্পানি সম্পর্কে সঠিকভাবে তাদের যাচাই করা সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে নিজেই বিনিয়োগ না করে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসা উচিত। অন্যথায় গুজবভিত্তিক ইনসাইডার ট্রেডিং হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ভারতে প্রচুর মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। যে কারণে ভারতের শেয়ারবাজার আজ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য মাত্রায় পৌঁছে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশে এই ফান্ডের আকার খুবই ছোট। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত সফলতা দেখা যাচ্ছে না। এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
রকিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মানি মার্কেটের চেয়ে ক্যাপিটাল মার্কেটে অতি নজরদারি করে। যে কারণে শেয়ারবাজারের দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন এখন ৫০০ কোটিতে নেমে এসেছে। অথচ নিয়মিতভাবে ঋণ খেলাপির পরিমাণ বাড়ছে। তা সমাধান করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের শেয়ারবাজারের বিকল্প নাই। কিন্তু সরকার যদি শেয়ারবাজার বাদ দিয়ে নিজেই সবকিছু করতে চায়, তাহলে দেশের উন্নয়ন হবে না।
ডিএসইর আরেক পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ২০১১ ও ১২ সালের দিকে চার হাজার কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু ভালো ফলাফল হয়নি। যাতে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছে। তাই এই খাতে ভালো কিছু করতে হলে, দৃশ্যমান ফলাফল দেখাতে হবে। আর শেয়ারবাজার উন্নয়নে অ্যাসেট ম্যানেজারদের রেটিং করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা