আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩০ মে ২০১৭, মঙ্গলবার |

kidarkar

শেয়ার কেলেঙ্কারি চিত্র উইকিপিডিয়াতে

share scamশেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশের শেয়ারবাজার নিয়ে উইকিপিডিয়াতে রিপোর্ট প্রকাশ নতুন কিছু নয়। তবে সম্পূর্ণ আলাদা করে সম্প্রতি উইকিপিডিয়াতে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের ২০১০-১১’সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির চিত্র।

উইকিপিডিয়াতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে মার্কেট ৬২ শতাংশ এবং ২০১০ সালে ৮৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু জানুয়ারি ২০১১ সালে মার্কেটে ১০ শতাংশ এবং তারপরের মাসেই ৩০ শতাংশ দরপতন হয়। আর এই দরপতনকেই শেয়ার কেলেঙ্কারি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং বাংলাদেশের আওয়ামী সরকারের ব্যর্থতার কারণে এই ধস নেমেছে বলে বিনিয়োগকারীদের কাছে মনে হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা ঐ সময়ে বাজারকে অতিমূল্যায়িত হিসেবে বিবেচনা করেছেন এবং মার্কেট ধসকে স্বাভাবিক হিসেবেই দেখেছেন। share scam 8

উইকিপিডিয়াতে শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের শেয়ারমার্কেট অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ে। ঐ সময়ে বাজারের লাগাম টেনে ধরতে বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্যের শিকল টেনে মুদ্রাস্ফিতী নিয়ন্ত্রণ করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রক্ষণশীল মুদ্রানীতির কারণে ১৩ ডিসেম্বর ২৮৫ পয়েন্ট সূচকের পতন হয়। ঐ সময় ডিএসইর জেনারেল ইনডেক্স ছিল সাড়ে ৮ হাজার। অর্থাৎ এদিন সূচকের ৩ শতাংশ পতন হয়। দ্বিতীয় পতনটি হয় ১৯ ডিসেম্বর। এদিন ৫৫১ পয়েন্ট সূচকের পতন হয় যা ছিল মোট ইনডেক্সের ৭ শতাংশ। আর এটিই ছিল ডিএসইর ৫৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দরপতন। বিনিয়োগকারীরা দরপতনের প্রতিবাদে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিক্ষোভ,অগ্নি সংযোগ করেন।share scam 5

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাৎক্ষণিক বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে মিলিত হয়ে বাজারকে পতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলাফলস্বরুপ তারপরের দিন বাজারে সূচক ১.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

২০১০ সালের ডিসেম্বর এবং ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসের শেয়ারবাজারে সূচক সাড়ে ৮ হাজার থেকে ১৮০০ পয়েন্ট বা ২১ শতাংশ কমে যায়। এর এরই মধ্যে পরিকল্পনাকারীরা বাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা লুট করে নেয়। এক বছর না যেতেই মার্কেটের অবস্থান ৮৯০০ থেকে ৫৫০০ পয়েন্টে অবস্থান করে। share scam 6

বাজারের এই মন্দাবস্থার কারণ অনুসন্ধানে ২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ইব্রাহিম খালেদকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন মাস পর তদন্ত প্রতিবেদনে ৬০ জন প্রভাবশালীর নাম উঠে আসে যারা শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত। স্টক এক্সচেঞ্জসহ বাজারের মার্চেন্ট ব্যাংক,সিকিউরিটিজ হাউজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষাতকারে শেয়ার কেলেঙ্কারির জন্য অমনিবাস অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়। যে অ্যাকাউন্টে অনেক বিও আইডি লেনদেন করে থাকে। শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িত ৬০ জন প্রভাবশালীর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। ১৯৯৬ সালের মার্কেট ক্রাশেও যিনি মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ড রকিবুর রহমান, তৎকালীন এসইসি’র চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার, এসইসি’র সদস্য মনসুর আলম, বিএনপি’র নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ অনেকেই শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত। বার বার বিভিন্ন মহল থেকে শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করার আহবান জানানো হলেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত পরবর্তী তদন্তের অজুহাতে তাদের নাম প্রকাশ করেননি। share scam 9

পরবর্তীতে এসইসি পুন:গঠন করা হয়। মার্কেটকে স্থিতিশীল করার জন্য তারল্যের যোগান দিতে বাংলাদেশ ফান্ডসহ অন্যান্য বিভিন্ন ফান্ড গঠন করা হয়। কিন্তু কেলেঙ্কারির সাড়ে ছয় বছর অতিবাহিত হওয়ার পর আজো মার্কেটে স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌছায়নি।

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.