১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করেছে এবি ব্যাংক
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংক ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ বছরে ১ হাজার ৩২৩ কোটি ৩৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা ঋণ পুনর্গঠন করেছে। ২০১৫ সালে পুনর্গঠন ঋণ ছিল ৬৬৬ কোটি ৭৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। ব্যাংকটি জানায় ২৯ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে জারি হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বড় ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালা মেনেই তা করা হয়েছে।
ঋণগুলো মন্দ হয়ে পড়ায় পুনর্গঠন করতে বাধ্য হয়েছে ব্যাংক।
চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ, অনিয়ম, সুশাসনে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় আমানতকারীদের স্বার্থে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকটির ২০১৬ বছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিইএল কন্সট্রাকশনের সবচেয়ে বেশি ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মোট ৪১৩ কোটি ৭৯ লাখ ১৫ হাজার টাকার ঋণ পুনর্গঠন হয়েছে। এছাড়া নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজের ৩৪৬ কোটি ৬৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা; আর এন্ড আর হোল্ডিংসের ২৬৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা; বেক্সিমকোর ১৬৬ কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা; ইন্টারন্যাশনাল নিট ওয়্যার ৭২ কোটি ৮৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা; আবদুল মোনেম সুগার ৪৯ কোটি ৯৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা এবং আর এন্ড আর এভিয়েশনের ৮ কোটি ৯০ লাখ ১৬ হাজার টাকার ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক ইন্সপেকশন ২ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শেখ মোজাফ্ফর হোসেন এবি ব্যাংকের পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পর্যবেক্ষক ব্যাংকটির পর্ষদ সভায় অংশ নিবেন। এছাড়া তিনি ঋণ প্রদানে স্বচ্ছতা ফেরাতে, আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও আইন পরিপালন, করপোরেট সুশাসন এবং ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বাড়াতে পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করবেন।
ব্যাংকটির কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, বর্তমানে ব্যাংকটিতে দু:সময় যাচ্ছে। কারণ বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি ব্যাংকটির দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের অভাব এখনো দূর করা যায়নি। তাছাড়া সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যবেক্ষক বসিয়েছে।
রাইট শেয়ারের বিষয়ে ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, ২০১৬ এ আমরা ৫আর: ৪ অনুপাতে রাইট শেয়ারের ঘোষণা দিয়েছিলাম। ইজিএমে বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের অনুমোদনও হয়। কিন্তু ব্যাংকটিতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়ায় রাইট শেয়ারের কাজ প্রায় থেমে আছে।
উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ সমাপ্ত বছরের জন্য ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের ১২.৫০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়ার সুপারিশ করেছে। আলোচিত বছরে ব্যাংকটির প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ১৫০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২.২৫ টাকা। গত দুই বছর ধরে ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের সাড়ে ১২ শতাংশ করে স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
২০১৭ বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৩৫ টাকা এবং এককভাবে ০.১৬ টাকা। এর আগের বছর সমন্বিত ইপিএস ছিল ০.৯৬ টাকা এবং এককভাবে ০.৭৯ টাকা। আলোচিত সময়ের ব্যবধানে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস ৬৪ শতাংশ কমেছে এবং এককভাবে ব্যাংকটির মুনাফা ৮০ শতাংশ কমেছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ