এক মাসের মধ্যেই উৎপাদনে যাবে এ্যাপোলো ইস্পাত: প্রয়োজন গ্যাস সংযোগ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অর্থে এ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স লিমিটেডের নন-অক্সিডাইজিং ফারনেস (এনওএফ) প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের জন্য গ্যাস বরাদ্দের অনুমোদনও পেয়েছে কোম্পানিটি। শুধু গ্যাসের সরবরাহ পেলে এক মাসের মধ্যেই পরিবেশবান্ধব এ প্লান্টে উৎপাদন শুরু সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির কর্মকর্তারা।
নন-অক্সিডাইজিং ফারনেস বা এনওএফ হচ্ছে এমন এক প্রযুক্তি, যেখানে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে টিন উৎপাদন করা হয়। এ ধরনের টিনে সহজে মরিচা ধরে না। এ কারণে এনওএফ প্রযুক্তিতে উৎপাদিত টিনের স্থায়িত্ব অনেক বেশি হয়। এছাড়া সাধারণ প্রযুক্তির কারখানায় অ্যাসিড ব্যবহার করে টিনের কাঁচামাল থেকে ধুলাবালি সরানো হয়। কিন্তু এনওএফ প্রকল্পে উচ্চ তাপের সাহায্যে ধুলাবালি ও ময়লা পরিষ্কার করা হবে। এনওএফ প্রযুক্তিতে সালফিউরিক অ্যাসিড, কস্টিক সোডা ও লেডের ব্যবহার ছাড়াই ঢেউটিন উৎপাদন করা হয়। এ কারণে একদিকে প্রকল্পটি তুলনামূলক বেশি পরিবেশবান্ধব।
কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, এনওএফ প্রকল্পের জন্য জার্মানি থেকে আমদানি করা সব যন্ত্রপাতি বসানোর কাজ শেষ। অবকাঠামো নির্মাণকাজ আগেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে উৎপাদন শুরু জন্য এখনো গ্যাস সংযোগ হয়নি।
কর্মকর্তারা আরো বলেন, নতুন এ প্রকল্পে উৎপাদন শুরু হলে কোম্পানির বার্ষিক বিক্রি ৫১৮ কোটি টাকা বাড়বে। এতে বার্ষিক মুনাফা প্রায় ৪৩ কোটি টাকা বাড়বে। একই সঙ্গে এ প্লান্টে ২৫০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে।
২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে ১০ কোটি শেয়ার ছেড়ে মোট ২২০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করে এ্যাপোলো ইস্পাত। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ১৫৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যাংকঋণ পরিশোধ ও ৫৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা নতুন এনওএফ প্রকল্পে ব্যয়ের ঘোষণা দেয় কোম্পানি। ২০১৫ সালের মধ্যেই এ প্রকল্পে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা ছিল তাদের। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা, হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার মতো ঘটনার কারণে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট বিদেশী টেকনিশিয়ানরা সময়মতো কাজে আসছিলেন না। এ কারণে এনওএফ প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে শেষ হয়নি। তাছাড়া তীব্র ঘাটতির কারণে নতুন করে গ্যাসের সংযোগ প্রদান বন্ধ থাকাও প্রকল্পের কাজ পেছানোর একটি কারণ।
তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ নির্দেশনায় গত মে মাসে অন্য কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে এ্যাপোলো ইস্পাতের নতুন প্লান্টেও গ্যাস সংযোগ দেয়ার অনুমোদন হয়। এর পর পরই প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করে চালুর উদ্যোগ নেয় কোম্পানিটি।
শিল্পসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে ঢেউটিনের বাজারের সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ একেএস স্টিলের মুরগি মার্কা ঢেউটিনের দখলে। আর ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এ্যাপোলো ইস্পাতের রানী মার্কা ঢেউটিন।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ