আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ অক্টোবর ২০১৭, রবিবার |

kidarkar

গোপনীয় বিল্ডারবার্গ মিটিংয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

buildersশেয়ারবাজার ডেস্ক: পৃথিবীর সব থেকে গোপনীয় মিটিং হচ্ছে বিল্ডারবার্গ মিটিং। এই মিটিং পৃথিবীর সবথেকে ক্ষমতাবানদের মিটিং। এটা এতই গোপন যে মিটিং এর ভ্যানুর আশেপাশের একটা বিশাল এরিয়ায় মধ্যে কোন মিডিয়াক্যামেরা, কোন নিউজপেপার, কোন সাংবাদিককে ঢুকতে দেয়া হয়না। পৃথিবীর কোন নিউজপেপার বা টিভি চ্যানেলে বিল্ডারবার্গ মিটিং এ কি হয়, কি নিয়ে ডিসকাশন হয়, কি কি সিদ্ধান্ত হয় এসব নিয়ে কোন নিউজ প্রচার করা হয়না। এই টেকনোলোজির যুগে এসেও বিল্ডবার্গ মিটিং এর ভেতরের খবর তেমন কিছুই জানা সম্ভব হয়নি। এই মিটিং এ অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত আমন্ত্রিত হয়না। অন্য দেশগুলার প্রেসিডেন্টদের তো আমন্ত্রন পাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। আমাদের চেনা পরিচিত ধনীদের মধ্যে শুধুমাত্র বিল গেটস ২০১০ সালে একবার অংশগ্রহণ করেছিল। বিল ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে একবার অংশগ্রহণ করেছিলো। তাহলে কারা এখানে অংশগ্রহণ করে? একমাত্র বিল্ডারবার্গ ক্লাবের সদস্যরাই এই মিটিং এ অংশ নিতে পারে। পৃথিবীর সবথেকে বড় বড় ব্যাংক এবং প্রতিষ্ঠানের মালিক, বড় বড় কোম্পানির CEO, পৃথিবীর সবথেকে বড় বড় রাজ পরিবারের সদস্য অর্থাৎ পেছন থেকে পুরো পৃথিবী যারা কন্ট্রোল করতেছে এমন ১৫০-২০০ জন মানুষ এই মিটিং এ পার্টিসিপেট করে। বিল্ডারবার্গ মিটিং এ কি পরিমাণ সিকিউরিটি মেইন্টেন করা হয় সেটা জানতে প্রথম কমেন্টের ভিডিওটা দেখতে পারেন। এই বছরের জুন মাসে ৬৩ তম বিল্ডারবার্গ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে অষ্ট্রিয়াতে একদম পাহাড়ের মধ্যে একটা ক্যাসেলে। পাহাড়ের আশেপাশের ৬ মাইল ব্যাসার্ধের এরিয়া ৭ দিন আগে থেকে পুরোপুরি সিল করা হয়েছিলো, কোন গাড়িঘোড়া ঢুকতে দেয়া হয়নি। মোট ২ হাজার পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছিলো শেখানে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই বছরে প্রথমবারের মতো বিল্ডারবার্গ গ্রুপ তাদের মিটিং এ যারা পার্টিসিপেট করেছে তার একটা ফুল লিস্ট তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এবং গেজ হোয়াট? বারাক অবামা আমন্ত্রিত হয়নি। এরা অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্টরে গোনেই না। বর্তমান বিশ্ব যেসব সুপার এলিটরা পরিচালনা করছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রকারফেলার পরিবার। তো ১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে তারা তেলের ব্যবসা করে একদম ফুলে ফেপে ওঠে। তখন পুরো পৃথিবীর তেলের ব্যবসায় তাদের একরকম একাধিপত্য ছিল বলা যায়। জানা যায় রকারফেলার পরিবারের অন্যতম সদস্য জন ডি রকারফেলারের একার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণই ছিল সেই আমলের টাকায় ৪০০ বিলিওন ডলার। অনেকের মতে পুরো রকারফেলার পরিবারের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ নাকি এখন ৩০০ ট্রিলিওন ডলারের কাছাকাছি। অবশ্য তাদের টাকার পরিমাণ হিসাব করা বোকামি, কারণ তারাই টাকা বানায়। পৃথিবীর সব বড় বড় ব্যাংকের মালিকানা এদেরই। আর ব্যাংক কীভাবে পরিচালিত হয় তার ব্যাসিক আইডিয়া কারোর থাকলেই জানার কথা যে ব্যাংকই টাকা তৈরি করে। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে আচ্ছা পৃথিবীর সবথেকে বড় কোম্পানির CEO’রা যদি এই মিটিং এ অংশগ্রহণ করে তাহলে তো গুগোল আর ফেসবুকের CEOদের শেখানে নিয়মিত পাওয়া উচিৎ। মজার ব্যাপার হচ্ছে অনেকেই জানেনা গুগোল ফেসবুক এরা পৃথিবীর টপ ৫০টা কোম্পানির মধ্যে নাই। Exxon Mobil নামে একটি কোম্পানি আছে। এদের সম্পর্কে মজা করে বলা হয় Exxon Mobil চাইলে গুগোল-মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানিকে পেটি ক্যাস দিয়ে কিনে নিতে পারে। এই Exxon Mobil, Shell, Chevron সহ পৃথিবীর টপ প্রায় ৮-১০ টা কোম্পানির ডিরেক্ট মালিক এই রকারফেলার ফ্যামিলি। যাই হোক, ১৯ শতকের মাঝামাঝি এসে এই পরিবার এই অর্থবিত্তের উপর ভর করে এতো ক্ষমতাবান হয়ে গিয়েছিলো যে তারা UN এবং মার্কিন সরকারের সব বড় বড় মাথাকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছিলো। তখন প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, এই রকারফেলার পরিবার তাদের ক্ষমতা দিয়ে নিজেদের অনুশাসনে একটি গোপন Invisible Government তৈরি করতে চাচ্ছে যাদের টার্গেট অদৃশ্য থেকে পুরো পৃথিবী শাসন করা। তার কিছুদিন পরেই রকারফেলাররা তখনকার পৃথিবীর সবথেকে ক্ষমতাবান ৪টা পরিবার রকারফেলার, রথসচাইল্ড, মরগান এবং বুশ পরিবারের প্রত্যক্ষ ফান্ডিং এবং তত্ত্বাবধানে পৃথিবীর সব সুপার এলিটদের সাথে নিয়ে গড়ে তোলে বিল্ডারবার্গ ক্লাব। আমার ব্যক্তিগত ধারণা হলো, আদিম যে ইলুমিনাটি নামক সংগঠনটি আমরা চিনি তা এখন বিলুপ্ত, তারই পরিবর্তিত এবং আধুনিক রুপ এই বিল্ডারবার্গ ক্লাব। প্রথম বিল্ডারবার্গ মিটিং অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৪ সালে। এটাকেই রুজভেল্টের সতর্ক করে দেয়া Invisible Government এর প্রথম সংসদ বলা চলে। এরপর আরও ৬২টা মিটিং হয়ে গেছে কিন্তু এরা ঠিক ৭০ বছর আগে যেমন সিক্রেট ছিল এখনও তেমনই সিক্রেট। এদের নিয়ে কোন মিডিয়া ঘাটায় না। ঘাটাবে কি? এরাই তো মিডিয়ার মালিক। তাদের মিডিয়া তারা নিজেদের মতো করে কন্ট্রোল করে। পৃথিবী আগামী ১০ বছর কেমন চলবে, ভালো না খারাপ, যুদ্ধ হবে কি হবেনা, মানুষ বাঁচবে কি মরবে সব ডিসিশন এরাই নেয়। প্রেসিডেন্টরা সব পাপেট, এদের নেয়া ডিসিশনই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এক্সিকিউট করাই প্রেসিডেন্টের কাজ।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.