সামান্য মর্যাদাটুকু পায় না প্রবাসীরা!
শেয়ারবাজার ডেস্ক: কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ থেকে নামার পর পরই সেখানকার ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের হয়রানির মুখে পড়কে হচ্ছে বাংলাদেশীদের। ভিসা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও এন্ট্রি সিল না দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আলাদা কক্ষে। সেখানে চলে উল্টা-পাল্টা জিজ্ঞাসাবাদ। সাথে হয়রানি ফ্রি।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা এক যাত্রী জানান, মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে নামার পর পরই বাংলাদেশী যাত্রীদের আলাদা করে লাইনে দাঁড় করাচ্ছেন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। নিজেদের খেয়ালখুশিমতো যাকে ইচ্ছে এন্ট্রি সিল না দিয়ে অফিসে ডেকে নিচ্ছেন তারা। জিজ্ঞাসাবাদের নামে দাঁড় করিয়ে রাখছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এর পর পছন্দ হলে এন্ট্রি সিল দিচ্ছেন, নয়তো আটক করে বিমানবন্দরের ভেতরের ইমিগ্রেশন ক্যাম্পে (হাজত) ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এর পর দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে সরকারি সফরে গিয়েও হেনস্থার শিকার হয়েছেন একাধিক যুগ্ম-সচিবসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তা। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) যুগ্মসচিব (ফুড সেইফটি অথরিটি) মাহবুব কবির মিলন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানান। স্টাটাসের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে আমাদের ব্র্যান্ডিং দেখলাম টয়লেট ক্লিনিং আর ফ্লোর সুইপিং। আহারে আমাদের সন্তানেরা! ৩০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের গর্বিত অংশীদার এরা। সামান্য মর্যাদাটুকু পায় না।
পাঠকদের জন্যে তার সেই ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো। তিনি স্ট্যাটাসে লিখেন:
‘সবার সরকারী বা অফিসিয়াল পাসপোর্ট (১২ জন) এবং সরকারী সফর হওয়া সত্বেও মালয়েশিয়া কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন কাউন্টারে অন এরাইভ্যাল ভিসা না দিয়ে আমাদের পাঠাল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে। সেখানে পেলাম চরম খারাপ ব্যবহার। ডলার সাথে আছে কিনা, কত ডলার নিয়ে ঢুকছি সেটাও পকেট থেকে বের করে দেখাতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাদের সিনিয়র এক যুগ্ম সচিব স্যার আমাদের সরকারী পরিচয় দিলে “গো” “গো আউট ফ্রম হেয়ার” বলে চিৎকার করে ওঠে মহিলা ইমিগ্রেশন অফিসার!! কয়েক বছর আগে একবার এসেছিলাম এখানে। তখন দেখিনি এরকম। দিনে দিনে উন্নতি!! হয়েছে দুই দেশের সম্পর্কের, উন্নতি!! হয়েছে আমাদের অবস্থার, আমাদের মান সন্মানের।’
তিনি আরো লিখেন, ‘কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে আমাদের ব্র্যান্ডিং দেখলাম টয়লেট ক্লিনিং আর ফ্লোর সুইপিং। আহারে আমাদের সন্তানেরা। ৩০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের গর্বিত অংশীদার এরা। সামান্য মর্যাদাটুকু পায় না। না দেশে, না বিদেশে। এই দেশে আমাদের সাথে এমন ব্যবহার করলে, এরা কি অবস্থায় আছে, তা কল্পনা করলেও গা শিউরে ওঠে। ফ্লোর মোছার জিনিস পত্র হাতে এক ছেলে বলল, স্যার চার লাখ টাকা দিয়ে আসছি, যে বেতন দেবে বলে আদম ব্যাপারী চুক্তি কতে এনেছে আমাদের, তার অর্ধেকও পাই না আমরা। কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর অংশীদার আমাদের এ ছেলেদের বিদেশ পাঠানো, বিশাল এক ব্যবসার হাতিয়ার। যা বিশ্বে কোথাও নেই। কোথায় আমাদের অবস্থান? দর কষাকষির ক্ষমতা এত কম কেন আমাদের? কবে উঠে দাঁড়াব আমরা?? প্রতিজ্ঞা করেছি, এদেশে আর কখনো আসব না।’
শেয়ারবাজারনিউজ/মু