যে কারণে ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন মুনাফা কনফিডেন্স সিমেন্টের
শাহ আলম নূর : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেড’র মুনাফা ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রকাশিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনে দেখা যায় চার বছরের সর্বনিম্ন মুনাফা করেছে প্রতিষ্ঠনটি। বিক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থতার কারণে সিমেন্ট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটির আয় চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২৭ শতাংশ কম হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, কোম্পানিটির আয় ব্যাপক পতনের জন্য বিশ্ববাজারে আকাশচুম্বী কাঁচামালের দামকে দায়ী করা হয়েছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১.৬৮ টাকা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২.৩১ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম ত্রৈমাসিকে ইপিএস ছিল ৩.৩৯ টাকা। কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে ইপিএস চিল ২.৫১ টাকা।
কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দামের অস্থিরতার কারণে তারা অনেকের মতো সমস্যায় পড়েছেন।
কনফিডেন্স সিমেন্টের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংস লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে কয়েকটি পাওয়ার প্ল্যান্ট রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দাম কিছুটা কমলেও এখনো স্থিতিশীল হয়নি বলেও জানান তিনি।
দেলোয়ার হোসেন অবশ্য বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয় সিমেন্ট নির্মাতার ক্যাশবুকে প্রতিফলিত হয়নি। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে কোম্পানির আয়ে পাওয়ার ব্যবসার অবদান অনেক বেশি।
বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের(বিসিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সিমেন্টের মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম বহুগুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য এই অপরিহার্য উপাদানটির উৎসের জন্য আমদানির উপর পুরোটাই নির্ভরশীল।
২০২২-২৩ অর্থ বছরে কোম্পানির একত্রিত নেট অপারেটিং নগদ প্রবাহ প্রতি শেয়ার (এনওসিইএফপিএস) জুলাই-সেপ্টেম্বর এর জন্য ঋণাত্মক ২.৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর এর জন্য নেতিবাচক ৩.৭২ টাকা ছিল। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এর শেয়ার প্রতি একত্রিত নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ৭৩.৯৫ টাকায় পৌঁছেছে যা একই বছরের জুনে ৭২.২৪ টাকা ছিল।
সিমেন্ট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠনটি ১৯৯৪ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে কোম্পানিটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১২ লাখ টন সিমেন্ট। কোম্পানিটি ১৯৯৫ সালে উভয় ঢাকা, চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। প্রতি বছর প্রতিষ্ঠনটি শেয়ারহোল্ডারদের বেশ ভাল লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫ শতাংশ নগদ এবং ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে৷ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম সেপ্টেম্বর থেকে প্রিমিয়ার শেয়ারে ৯৩.৫ টাকা ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে।