পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট ঘোষণাসহ বিনিয়োগকারীদের ২১ দফা দাবি

শেয়ারবাজার রিপোর্ট : আসন্ন বাজেট যাতে পুঁজিবাজার বান্ধব, বাজেটে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয় এবং অপ্রদশির্ত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানসহ পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে ২১দফা দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত পুঁজিবাজারের স্থায়ী স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে করণীয় লক্ষ্যে ‘গোল টেবিল বৈঠকে’ এ দাবি জানানো হয়।
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো: রুহুল আমিন আকন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড.এ.বি. মির্জা আজিজুল ইসলাম,চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান ড.এম.এ মজিদ,ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি মো: রকিবুর রহমান,বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদ খান, অর্থনীতিবিধ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড.আবু আহমেদ,অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রেসিডেন্ট ও জেনারেল সেক্রেটারী ড.হাসান ইমাম, পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: হেলাল উদ্দিন,ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আলীসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বিনিয়োগকারীরা ২১ দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: আসন্ন বাজেট যাতে পুঁজিবাজার বান্ধব হয় ও বাজেটে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয় এবং অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি।
পুঁজিবাজারে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা ও ক্ষতিগ্রস্ত মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীদের দু:খ-দুর্দশার কথা চিন্তা ভাবনা করে গত ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত মার্জিন ঋণের বিপরীতে সকল সুদ নি:শর্তভাবে মওকুফ করতে হবে এবং মার্জিন ঋণের সুদের হার দ্রুত কমাতে হবে।
বিএসইসি গত ১২ মে মার্জিন ঋণধারীদের ক্যাশ ডিভিডেন্ড নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো সংক্রান্ত অধিকার বাতিল করে পোর্টফোলিও অ্যাকাউন্টে জমা দেয়ার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন-সেটা ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দু:খ-দুর্দশার কথা চিন্তা করে উক্ত সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
পুঁজিবাজারের স্থায়ী স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে অতিরিক্ত প্রিমিয়ামসহ আইপিও অনুমোদন এক বছরের জন্য বন্ধ রাখতে হবে। কোন কারণ ছাড়াই ঘন ঘন আইপিও অনুমোদন চেয়া চলবে না। ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা মোতাবেক মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি আনতে হবে এবং দুর্বল ঋণগ্রস্ত কোম্পানি আইপিওতে অনুমোদন দেয়া বন্ধ করতে হবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার লভ্যাংশের অংশ তিন বছরের জন্য লকইন রাখতে হবে। কারসাজিরোধে বিএসইসিকে বাজার মনিটরিং আরো জোরদান করতে হবে।
পুঁজিবাজারের স্থায়ী স্থিতিশীলতার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে হবে।
সিঙ্গেল পার্টি এক্সপোজার লিমিটের সময়সীমা জুলাই ২০১৬ ইং থেকে বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করতে হবে।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের এক্সপোজার নিয়ে ডিএসই,সিএসই,আইসিবি,মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন বারংবার মিটিং করছেন কিন্তু যে সংস্থার মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন হবে অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন না। তাই স্টেকহোল্ডারদের এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করতে হবে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর্পোরেট ট্যাক্স কমাতে হবে এবং ব্যক্তি খাতের ক্যাশ ডিভিডেন্ডের ওপর দ্রুত কর কমানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দুখ-দুর্দশনার কথা চিন্তা করে করমুক্ত লভ্যাংশের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ারবাজার উন্নয়নের স্বার্থে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আয়কর রেয়াত দিতে হবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে শেয়ারহোল্ডারদের নিকট অবশ্যই অ্যানুয়াল রিপোর্ট (বার্ষিক প্রতিবেদন) পৌছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/সা