আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১, মঙ্গলবার |

kidarkar

বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়- বিএসইসি চেয়ারম্যান 

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এখনই বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় ও জায়গা র‌য়ে‌ছে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

এখন না করলে ভুল হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না। তখন বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ করা হবে বলেও তিনি জানান।

আজ মঙ্গলবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দু্বাইতে বিএসই‌সি ও ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের আয়োজিত ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার : পটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’ শীর্ষক ‘রোড শো’তে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এদিন দুবাইয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান প্রথম অনলাইনে বেনিফিশিয়ারি অনার্স (বিও) হিসাব উদ্বোধন করা হয়।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, গত দু’দিন আমরা দুবাইয়ের বিভিন্ন ব্যাংক ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে তাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখেছি। আমরা অনেকে ভুলেই গিয়েছিলাম দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের কাজ শেয়ারবাজারের এবং ব্যাংকের কাজ স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেওয়া। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাংকগুলো এক বছর মেয়াদি আমানত নিয়ে ৪-৫ বছর মেয়াদি ঋণ দেয়। যাতে করে ঋণ খেলাপি তৈরি হয় এবং ব্যাংকগুলোকে বিপদে পড়তে হয়।

তিনি বলেন, আগামিতে দেশে বড় বড় অর্থায়নের প্রয়োজন হবে। যা শেয়ারবাজার থেকে দিতে হবে। এটা বন্ডের মাধ্যমে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

গত কয়েকমাসে অনেক বন্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সব বন্ড বিক্রি হয়েছে। কোনো বন্ড আন্ডারসাবসক্রাইব হয়নি। এই বন্ড ব্যবসায়িদেরকে এগিয়ে নেবে। যারা ঝুঁকি নিতে না চায়, তারা বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, প্রতিটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ১০-১৮ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেবে। এখন কেউ যদি লোকসান করতে না চায়, তাহলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারে। এছাড়া বন্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এই ২ ক্ষেত্রে বিনিয়োগে ঝুকিঁ নেই বললেই চলে। তবে সক্ষমতা থাকলে নিজেই পোর্টফোলিও ম্যানেজ করতে পারে। এক্ষেত্রে ঝুঁকিও তার। ফলে লোকসান করে কাউকে দোষারোপ করা ঠিক হবে না।

‌এ সময় গ্রিন ফিল্ডের প্রজেক্টে উৎসাহিত করার কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে, সে কেনো শেয়ারবাজারে আসবে। তাই গ্রিন ফিল্ডের প্রজেক্ট দিতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আছে, তাদেরকে দিতে হবে। তারপরেও ওই তালিকাভুক্ত কোম্পানির অতিত রেকর্ড, উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ইতিহাস বিবেচনায় নিতে হবে।

তিনি বলেন, অধিকাংশ দেশে শেয়ারবাজারের উন্নতি হলে অর্থনীতির উন্নতি হয়, আর শেয়ারবাজারের পতন হলে অর্থনীতির পতন হয়। কিন্তু আমাদের দেশের এরকম হয় না।

সব ব্যবসাতেই ঝুঁকি আছে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, একইভাবে শেয়ারবাজারেও ঝুঁকি আছে। গেইন করতে গেলে ঝুঁকি নিতে হবে। এসময় তিনি বলেন, বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শেয়ারবাজারে অনেক রিফরমস হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, বাংলাদেশে শেয়ারবাজারসহ সব ক্ষেত্রেই এখন বিনিয়োগের উৎকৃষ্ট সময়। আমাদের শেয়ারবাজার সময়ের ব্যবধানে অনেক উন্নত হয়েছে। অনলাইনে বিও খোলাসহ নানা অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমান কমিশন আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আরিফ খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিদেশীদের বিনিয়োগ ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আকার খুবই দূর্বল। বাজারের উন্নয়নের জন্য এই দুই খাতের অংশগ্রহন বাড়াতে হবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, অর্থনীতির উন্নতির সঙ্গে শেয়ারবাজারের একইধারায় উন্নয়ন হয়নি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের থেকেও আমাদের শেয়ারবাজার অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই বাজারকে উন্নয়নে শুধুমাত্র ইক্যুইটির পরিবর্তে নতুন নতুন পণ্য সংযোজন করতে হবে।

তিনি বলেন, এখন শেয়ারবাজারে লেনদেন বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে সমস্যা্র সম্মুখিন হতে হয়। এই সমস্যা্ কাটিয়ে তোলার জন্য ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) চালু করা হবে। এরইমধ্যে ২০টির বেশি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে এই ওএমএস সিস্টেমের জন্য আবেদন করেছে।

এ সময় ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রহমত পাশা প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া তুলে ধরেন। তি‌নি ব‌লেন, দুবাই মলের পাশে একটি ডিজিটাল বুথ চালু করা হ‌চ্ছে। ওই বুথে গিয়ে এবং বাসায় বসেও দুবাইবাসীরা লেনদেন করতে পারবেন। এ সময় তিনি প্রবাসিদের জন্য বিনিয়োগ সুবিধা তুলে ধরেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.