চারশর্তে ফারইস্ট লাইফের পর্ষদ আবার পুনর্গঠন

আতাউর রহমান: নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ চারটি শর্তে আবারও পুনর্গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পর্ষদ পুনর্গঠন করে ছয়জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও শেয়ার ধারণের মাধ্যমে চারজন মনোনীত পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এবং ডিএসই, সিএসই ও সিডিবিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। সেই সাথে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান, নিয়োগ দেয়া স্বতন্ত্র পরিচালকদের এবং মনোনীত পরিচালকদের কাছে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জারি করা চিঠিটি এই চিঠি জারির পর বাতিল বলে গণ্য হবে।
বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, বিনিয়োগকারী, নীতিধারী এবং শেয়ারবাজারের বৃহত্তর স্বার্থে কমিশন ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের পুনর্গঠনে সম্মতি দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে চিঠিতে উল্লেখিত ছয়জন ব্যক্তি স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে এবং চারজন শেয়ার ধারণের মাধ্যমে মনোনীত পরিচালক হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
নিয়োগ দেয়া স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন, শেখ কবির হোসেন, এসএমআইইইই এর ডাঃ লাফিফা জামাল, মোজাম্মেল হক, মোঃ ইব্রাহিম হোসেন খান, শেখ মামুন খালেদ এবং ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম।
আর মনোনীত পরিচালকরা হল, আলহাজ্ব মোঃ হেলাল মিয়া, ফারইস্ট সিকিউরিটিজ , ট্রেডেনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল, জুপিটার বিজনেস।
সেই সাথে যে চার শর্ত নির্ধারণ করে দিয়েছে কমিশন সেটা হচ্ছে, পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের বিষয়ে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সম্মতি থাকবে। সেই সাথে পরবর্তী সাধারণ সভায় পোস্ট-ফ্যাক্টো হিসেবে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে হবে।
এছাড়া ট্রেডেনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ৯.৯১ শতাংশ, জুপিটার বিজনেস লিমিটেড ৯.৯০ শতাংশ এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ২ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করে আছে। এজন্য তদেরকে কোম্পানিটির মনোনীত পরিচালক হিসাবে নির্ধারণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের মধ্য থেকে এক বা একাধিক ব্যক্তি হতে পারে।
এদিকে কোম্পানিটির পুনর্গঠন পরিচালনা পর্ষদ কমিশনের নূন্যতম শেয়ার ধারণের নির্দেশনা অনুযায়ী কমপক্ষে স্বতন্ত্রভাবে পরিচালকদের ২ শতাংশ এবং কোম্পানির উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের দ্বারা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার বজায় রাখার বিষয় নিশ্চিত করব। অপরদিকে উপরোক্ত শেয়ার সহ কোম্পানির উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের হাতে থাকা সমস্ত শেয়ার ব্লক-মডিউলের অধীনে লক-ইন থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ শেয়ারবাজার নিউজকে বলেন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদ পুনরায় পুনর্গঠন করা হয়েছে। এর আগেও কোম্পানিটির পর্ষদ পনর্গঠন করা হয়েছিল। সেখানে যারা ছিলেন তারা সবাই ছিল স্বতন্ত্র পরিচালক। তবে বর্তমানে কোম্পানিটির কিছু শেয়ার হোল্ডিং পরিচালক রয়েছে। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় কমিশন কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ফের পুনর্গঠন করেছে
প্রসঙ্গত, গত বছরের গত ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসি থেকে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ অপসারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্যাহকে চেয়ারম্যান করে ১০ সদস্যের স্বতন্ত্র পরিচালকের একটি পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফারইস্ট ইসলামী লাইফের পুনর্গঠিত পর্ষদের সদস্যরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্যাহ, মোহাম্মদ সানাউল্লাহ অ্যান্ড এসোসিয়েটসের সিইও মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্নেল গাজী মো. খালিদ হোসেন, এসএমএসি ও এসএসএসি’র পার্টনার স্নেহাশিষ বড়ুয়া, একাত্তর মিডিয়ার এমডি অ্যান্ড চিফ এডিটর মোজাম্মেল হক, জি৭ সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান সুজাদুর রহমান, জনতা ব্যাংকের ডিএমডি জিকরুল হক এবং নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম চৌধুরী। তবে পর্ষদ পুনর্গঠনের এক মাসের মধ্যে ১০ অক্টোবর ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পুনর্গঠিত চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করেন।
এদিকে, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। চারটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এ যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫৪ অনুযায়ী যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসি’র নেতৃত্বে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্যান্য সংস্থার মধ্যে রয়েছে- দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
সিদ্ধান্ত যেটাই হোক গ্রাহকের টাকা দ্রুত দেয়ার ব্যবস্থা করেন মাঠে ময়দানে গ্রাহকরা যেভাবে আমাদেরকে কটু কথা ব্যবহার করতেছে আমাদের জন্য খুব কষ্টদায়ক হয়ে পড়তেছে স্যার আপনাদের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ গ্রাহকের টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করুন
মেয়াদ পূর্তির টাকা দ্রুত পরিশোধ চাই এই সমস্যা সমাধান করতে পারলে সব সমস্যা সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।