আইসিএসবি অ্যাওয়ার্ড প্রদান
আইন মেনে চলা নিশ্চিত করেন কোম্পানি সচিব: এফ রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোম্পানি সঠিকভাবে চলছে কিনা সেটা নিশ্চিত করতে কোম্পানি সচিব বড় ভূমিকা পালন করেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইনস্টিটিটিউট অফ চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অফ বাংলাদেশের (আইসিএসবি) অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
স্বচ্ছ করপোরেট গভর্নেন্স এবং কোম্পানির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে করপোরেট গভর্নেন্স এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেয় আইসিএসবি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সালমান এফ রহমান।
তিনি বলেন, ‘একজন চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট কোম্পানির হিসাব বছর শেষে করেন। একজন কস্ট ম্যানেজমেন্ট একাউন্ট্যান্ট খরচের হিসাব ব্যবস্থাপককে জানান। কিন্তু একজন কোম্পানি সচিব প্রতিদিন কোম্পানি চালাতে আইন পরিপালিত হচ্ছে কিনা সেটা দেখাশোনা করেন।কোম্পানি আইন মেনে চলছে কিনা সেটার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কোম্পানি সচিব।’
আইসিএসবির নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী ২০২১ সালে কোম্পানিগুলোর সাফল্যের ভিত্তিতে এই পুরস্কার দেয়া হয়। এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রমোটিং গভর্নিং এক্সিলেন্স’।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিএসবির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ এফসিএস, কর্পোরেট গভর্নেন্স কমিটির চেয়ারম্যান এম নুরুল আলম এফসিএস ও কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
১২টি ক্যাটাগরিতে ডিএসই এবং সিএসই তালিকাভুক্ত বিজয়ী কোম্পানিগুলোকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হয়। গোল্ড, সিলভার ও ব্রোঞ্জ- তিনটি ক্যাটাগরিতে কোম্পানিগুলোকে পুরস্কার দেয়া হয়।
জেনারেল ব্যাংকিং সেক্টরে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড। মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড সিলভার এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
ইসলামিক ব্যাংকিং ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ডিবিএইচ ফাইন্যান্স পিএলসি। আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড সিলভার এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড পেয়েছে ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড।
জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও পিপলস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড যৌথভাবে সিলভার এবং সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড যৌথভাবে ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
লাইফ ইন্স্যুরেন্স ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড সিলভার এবং সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
ফার্মাসিউটিক্যালস ও কেমিক্যাল ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড সিলভার এবং ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
টেক্সটাইল ও আরএমজি ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল পিএলসি। মতিন স্পিনিং মিলস পিএলসি সিলভার এবং স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
ফুড ও অ্যালায়েড ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড। গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সিলভার এবং অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড সিলভার এবং রানার অটোমোবাইলস পিএলসি ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।
ম্যানুফ্যাকচারিং ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে আরএকে সিরামিকস বাংলাদেশ লিমিটেড ও ম্যারিকো বাংলাদেশলিমিটেড। যৌথভাবে সিলভার অর্জন করেছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড ও প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস পিএলসি।
ফুয়েল অ্যান্ড পাওয়ার ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। সামিট পাওয়ার লিমিটেড সিলভার এবং ডোরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
সার্ভিস ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড। ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস পিএলসি সিলভার এবং ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আমি দেশের সেরা করপোরেট হাউসগুলো বাছাই এবং তাদের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য আইসিএসবির প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। আমি বিশ্বাস করি, এই পুরস্কার বাংলাদেশের অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে তাদের গভর্নেন্স ও কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিষয়গুলো আরও উন্নত করতে উৎসাহিত করবে। যা দেশে টেকসই করপোরেট খাত গড়ে তোলায় এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। পাশাপাশি বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের সক্ষমতা তৈরি হবে।’
আইসিএসবি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ এফসিএস বলেন, বেসরকারি খাতকে শৃঙ্খলাবদ্ধ, সমৃদ্ধ ও বিকশিত করার লক্ষ্যে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিদেরকে অনুরোধ করবো, আইসিএসবি পেশাকে বিকশিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা ও উদ্যোগ গ্রহণের জন্য। যাতে এখান থেকে গড়ে ওঠা পেশাজীবীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি এবং ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনে অবদান রাখতে পারেন।’
আইসিএসবি-এর করপোরেট গভর্নেন্স কমিটির চেয়ারম্যান এম নুরুল আলম এফসিএস বলেন, করপোরেট খাতে সুশাসন অনুশীলনে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে এবং সুশাসন অনুশীলনের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে করপোরেট গভর্নেন্স এক্সিলেন্সের জন্য জাতীয় পুরস্কার চালু করেছে আইসিএসবি। এটি এখন দেশের করপোরেট খাতে বহুল প্রতীক্ষিত আয়োজনে পরিণত হয়েছে।’