আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০১ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার |

kidarkar

টানা তিন সপ্তাহ পতনে শেয়ারবাজার

পতনের ধারা থেকে বের হতে পারছে না শেয়ার বাজার

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেষ্টার পরও পতনের ধারা থেকে সরানো যাচ্ছে না দেশের শেয়ারবাজার। অব্যাহত পতনে প্রতিদিন কোটি টাকার বাজার মূলধন হারাচ্ছে বাজার। বড় অঙ্কের বাজার মূলধন হারানোর পাশাপাশি প্রতিদিনই দেশে শেয়ার বাজারে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পতনের ধারা অব্যাহত থাকায় আরও পতনের শঙ্কা তৈরি হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। বাজার নিয়ে নানা ধরনের গুজবও তৈরি হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করছেন। এতে বড় বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে প্রতিদিন বড় দরপতন হচ্ছে।
দরপতনের সঙ্গে শেয়ারবাজারে প্রকট হয়ে উঠেছে ক্রেতা সংকট। এতে কমেছে লেনদেনের গতি। একই সঙ্গে দিনের লেনদেনের পুরো সময় ক্রেতাশূন্য পড়ে থাকছে সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান। ক্রেতা সংকটে পড়ে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে।
এদিকে বাজার পর্যালোচনায দেখা যায় গত এক সপ্তাহে সবকটি মূল্যসূচকের পতন দিয়ে পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এতে টানা তিন সপ্তাহ শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের পতন হলো। মূল্যসূচক কমলেও গত সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিয়েছে, তার দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ফলে বেড়েছে বাজার মূলধন।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক সপ্তাহে বাজার মূলধন প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৪১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯৫৬ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়ে গেছে।
বাজার মূলধন বাড়ার সপ্তাহে ডিএসইতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৫৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৭৬২ কোটি ৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। মোট লেনদেন কমার কারণ গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪০টির। আর ২৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৩৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৮ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৮ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক ও বাছাই করা সূচকের পাশাপাশি কমেছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪০ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৭ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৯ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ৭৪ কোটি ২৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, এডিএন টেলিকম, রূপালী লাইফ, আরডি ফুড এবং আমরা নেটওয়ার্ক।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.