আজ: রবিবার, ০৫ মে ২০২৪ইং, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৭ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার |

kidarkar

টানা চার কার্যদিবস বাড়লো সূচক

বিনিয়োগকারীদের অবণ্টিত লভ্যাংশ আদায় করবে সিএমএসএফ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বিনিয়োগকারীদের না দেওয়া লভ্যাংশ আদায়ে কোম্পানিগুলোতে দফায় দফায় তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। অলস পড়ে থাকা লভ্যাংশ খুঁজে বের করে তা আদায়ের পরিকল্পনা করছে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ)।
শেয়ারবাজারে বর্ষবরণের আমেজে নবতর উদ্ভাবন সিএমএসএফের তহবিল ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় সিএমএসএফের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এসব তথ্য জানান।
সভাপতির বক্তব্যে নজিবুর রহমান বলেন, বর্তমান শেয়ারবাজার ভাইব্রেন্ট। সামনে আরো ভাইব্রেন্ট হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা বিনিয়োগকারীদের দাবি আদায়ে কাজ করছি। বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পতি হচ্ছে। এটা চলমান থাকবে।
অবন্টিত লভ্যাংশ আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চেষ্টা করছি অলস পড়ে থাকা লভ্যাংশ খুঁজে বের করতে। এই ব্যাপারে পরিকল্পনা করেছি। এরই লক্ষ্যে ব্যাংক-বিমার বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বিনিয়োগকারীদের পাওনা লভ্যাংশের (ডিভিডেন্ড) এক টাকাও ছাড় দেওয়া হবে না। সুদে আসলে সব আদায় করা হবে। কোনও অজুহাত শোনা হবে না। লভ্যাংশ ফেরত না দিলে অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবো।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে লভ্যাংশ পাবার জন্য। বছর শেষে সেই লভ্যাংশ তাদের কাছে যাচ্ছে না। তারা পাচ্ছেও না। বিভিন্নভাবে রয়ে যাচ্ছে অন্য কোথায়। দেখা যাচ্ছে, বিনিয়োগকারীর লভ্যাংশ না দিয়ে অন্য কোথায় বিনিয়োগ বা ব্যবহার হচ্ছে। মেরে খাচ্ছে। দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের খাতে ব্যয় করছে। কিন্তু কথা হলে এটা অন্যের আমানত। এটা বেমালুম ভুলে যায়। এ ধরনের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সবাই বলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নাই জানিয়ে তিনি বলেন, যারা বিনিয়োগের লভ্যাংশ দিচ্ছে না, যা অলসভাবে পড়ে আছে। ব্যবহার হচ্ছে না। এমন অর্থের পরিমাণ ২১ হাজার কোটি টাকা মতো আমাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে। সেই অর্থ বা লভ্যাংশ সঠিক ব্যবহারের জন্য আমরা ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) গঠন করি। এরপর দেখি, তারা অটোভাবেই বিনিয়োগকারীদের খুঁজে পাচ্ছে। তাদের পাওনা আমানত ফেরতও দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এরপরও এই পযর্ন্ত ১ হাজার কোটি টাকার মতো লভ্যাংশ আদায় হয়েছে। আরও লভ্যাংশ আসার পথে রয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বলেন, লভ্যাংশ বাবদ বিমায় ৭০ কোটি টাকা রয়েছে, শোনা যাচ্ছে। কিন্তু কোথায়, কীভাবে সেটা আমার জানা নেই। তবে আমরা চেষ্টা করছি, অবন্টিত লভ্যাংশ যথা স্থানে ফিরিয়ে দিতে। এই ব্যাপারে আমি সিএমএসএফকে সব ধরনের সহায়তা করবো।
প্রসঙ্গত, সিএমএসএফ ইতোমধ্যে ৫৩৭ বিনিয়োগকারীর নগদ ১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৮২ টাকা এবং ২০৩ জন বিনিয়োগকারীর ২ লাখ ৪ হাজার ২০৪টি শেয়ারের দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ৬৪ জন বিনিয়োগকারী ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৩২ টাকা এবং ৪৮ জন বিনিয়োগকারীর ৬২ হাজার ৫৫৬টি শেয়ারের দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
এদিকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস ডিএসইতে মূল্যসূচক বাড়লো। তবে, অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে।
দুই বাজারে মূল্যসূচকের দুই চিত্র দেখা গেলেও উভয় বাজারে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সেইসঙ্গে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। অবশ্য দাম বাড়া বা কমার থেকে দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি।
দাম অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। আজ নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে এসেছে ৬টি প্রতিষ্ঠান। এতে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৯ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে।
অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ক্রেতা সংকটে পড়ার দিনে ডিএসইতে ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ২০৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখানো একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৭২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি টাকা।
টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমরা নেটওয়ার্কের ৩১ কোটি ৭৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আরডি ফুড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, ওরিয়ন ইনফিউশন, জেনেক্স ইনফোসিস, ইস্টার্ন হাউজিং, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এবং অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে দশমিক ২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১১৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩১টির এবং ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ১১ লাখ টাকা।

১ টি মতামত “বিনিয়োগকারীদের অবণ্টিত লভ্যাংশ আদায় করবে সিএমএসএফ”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.